মেঘ চাদরে শরীর ঢাকে আকাশবুড়ি
চাদর ভাঁজে লাজুক হাসে বৃষ্টি- কুঁড়ি
মেঘ নাকি তার বর
মেঘের বুকেই ঘর
আমিই দুরের-পর
উদাস-হতাশ একলা আমি হাঁটছি কেবল অজানাতে
শাল-গজারির মাঝ বরাবর ছন-জমিনের মেঠোপথে
পায়ের তলে শুকনো পাতা আর্তনাদে ঝাঝর বাজায়
অচিন পাখি কলরবে ধ্বনি গেঁথে শব্দ সাজায়
এরই ফাঁকে বৃষ্টি- বধূর সলাজ হাসি দু'পা বাড়াই
সুপারি-বরই-বাঁশবাগানের বুক মাড়াতেই পথটা হারাই
শেষ না হওয়া অচিন পথের শরীর ছুঁয়ে নিলাম ঝুঁকি
দরজা ঠেলে ঘোমটা ফেলে বৃষ্টিবধূর উঠোন উঁকি
গর্জে উঠে বউকে শাসন কড়া বচন মেঘের ধমক
বুকের তলে তবলা কাঁপে বৃষ্টিবধূর কান্না চমক
ওলটপালট আকাশ জ্বলে সব ভিজে যায় থমকে দাঁড়াই
সে জল শুধু শরীর ছুঁতেই শিহরণে মনকে নাড়াই
আবার হাঁটি সামনে দেখি জলের জগত হাতছানি দেয়
শাপলা শালুক পদ্ম ফুলে কাছে টেনে মন কেড়ে নেয়
অসীম জলের মন কেমনের আচমকা বিল পথ অজানা
সে বিল ওপর বক বদলে শঙ্খ- চিলের আনাগোনা
শাপলা ছুঁয়ে পদ্ম ছুঁয়ে কলার ভেলায় ছুটে চলা
একলা আমি মাঝি সেজে নিজের সাথেই কথা বলা
বৃষ্টিবধূ কান্না থামায় অদৃশ্য হয় সন্ধ্যা নামে
কলার ভেলা ভেসেই চলে চিঠি পাঠায় অচিন খামে
বৃষ্টিবধূ ফিরবে না আর কেননা তার জলেই জীবন
জল ফুরালো অকালে তাই জল কুমারীর অকাল মরণ
মন কেমনের বিলে ফিরে মন খারাপের দলে থাকি
সূর্য গেল সন্ধ্যা এল তারারা সব দিচ্ছে ফাঁকি
চাঁদ কুমারি দাঁড়িয়ে একা আকাশ বুড়ীর বারান্দাতে
জলের বুকে রুপের আলো পাগল হলাম তার হাসিতে
মেঘ নাকি তার ভাই
ভয়ে থাকি তাই
বৃষ্টিবধূ মনেই থাকে আড্ডা জমে চাঁদের সাথে
চাঁদকে বলি বউ হবে কি কেউ না থাকা গহন রাতে
ভরাট দেহে বেহেস্ত হুর আকাশ পরী চাঁদটা যেনো
চাঁদকে বলি লজ্জা কীসের এতো কিছু ভাবনা কেন
তোমার নেশায় বিভোর হয়ে আমিটাকেই গেলাম ভুলে
মন কেমনের জলে তুমি আদর ফেলো নেবো তুলে
শাপলা শালুক পদ্ম ছুঁয়ে জলের কসম ভালবাসি
চাঁদ গলে যায় প্রেম ঢেলে দেয় উথাল পাথাল আমি হাসি
গভীর হাওয়ার রাতে দু'জন হারাই পরস্পরে মিশে
চন্দ্রস্নানে পাগল হয়ে বৈঠা ফেলি চাঁদের বিষে
কলার ভেলা ভেসে চলে অচিন কোথাও অজানাতে
চিত হয়ে শুই চাঁদ মুখে ছুঁই জ্যোৎস্না মাখা গরম রাতে
মন কেমনের বিলে আমায় মনের ভেতর কেউ ডাকে না
বৃষ্টি বধূ চাঁদ যুবতী স্মৃতির স্রোতে কেউ থাকে না
ভোর উঁকি দেয় আকাশ রাঙায় লাল রবিদা অবাক হাসে
ঘুমিয়ে ছিলাম জেগে দেখি একলা শুয়ে সবুজ ঘাসে
মানুষ বিহীন আজব দ্বীপে অপেক্ষাতে পরাণ ফাটে
মন কেমনের বিলের জলে দু'চোখ রেখে সময় কাটে