ধর্মাবতার! ধর্মাবতার!
আমি মিথ্যা সাক্ষীর কিছুই জানি নাই বুজি নাই !
জীবনভর দেখলাম কত্ত সুখে
পক্ষীরা উড়াল মারে আসমানে,
হেই সুখ জীবনে আমরা ধরবার পারি নাই !
মরা গাঙের নাহান কাইটা গেল সারাডা জীবন,
ঐ তেনার আসমান থ্যাইকা বিজলী পইড়া পইড়া
পুড়াইয়া খাক করলো যেন্ আমাগো আর হগল সুখের চিন্তা,  
ভাতের চিন্তা ছাড়া আর কিছু ভাববার পারি নাই!


ধর্মাবতার! ধর্মাবতার!
কেডা খুন হইলো, কিরকমে হইলো, কোন আন্ধার মাঝে হইলো
তার কিছুই জানা নাই !
কত্তদিন এই প্যাডে ঠিক মতো দানা-পানি পড়ে নাই ধর্মাবতার;
বাজারে বাজারে ঘুরি, কোনোখানে কাজ-কাম নাই,
পাহাড়ের নাহান মেশিনগুলান শত মাইনষের কাম
এক লহমায় কইরা ফালায়, যেন আইছে কৈ-থ্যাইক্কা
দোজখের আইজরাইল কাইড়া লইতে
আমাগো বাইচা থাকনের যা আছিল সামান্য উপায় !


বাজারের মইধ্যে প্রতিদিন
আড্ডা বহায় কাশেম চেয়ারম্যানের দল, ধর্মাবতার!
তাগো সামনে বেলাজ কুত্তার নাহান বইয়া থাহি,
তবুও তাগো চোখ আমাগো দ্যাহে না, দ্যাহে
কার গতরে লাগতাছে কত ট্যাকাপয়সার ফুরফুরা বাতাস;


ধর্মাবতার, হেইদিন কে জানে কি হইলো !
কাশেম চেয়ারম্যান আমার দিকে তাকাইয়া হাইসা উঠলো,
নয়া চান্দের নাহান দাঁত বাইর কইরা,
হাতখানের ইশারায় কাছে ডাক দিয়া কইলো,
কিরে নুরুল কেমন আছস? হোন, আজ রাইতে বাড়িত আহিছ,
সাথে পোলা দুইডারেও আনবি, আজ তর দাওয়াত !
আর কলা পাতাও আনিছ কয়ডা বড় দেইখ্যা,
বউ আর মাইয়াটার লাইগাও খাওন দিয়া দিমু!
আর হোন, আরো কাছে আয়,
তোর একবার আমার লগে আদালত পাড়ায় যাওন লাগবো,
জজ সাহেবেরে তুই কইবি, শনিবার রাইতে
আমি মুকুন্দপাড়ায় আছিলাম, তুই নিজের চোক্ষে দেখছস,
পারবি না কইতে?


ধর্মাবতার, আমার চোক্ষে তখন
আমার পরিবারের পাথর চক্ষুগুলান ঘুরতাছিল মরা মাছের নাহান,
অগো কাছে আমি মরা গাছ ছাড়া আর কিছুই না ধর্মাবতার!
অগো মুখগুলা মরা ফুলের নাহান, ঝইরা ঝইরা পড়ে রাইত আর দিন
কব্বরের মতন এই বুকের মইধ্যে, ধর্মাবতার!


আমারে যদি ফাঁসিতে চড়ান ধর্মাবতার !
তবে চড়াইবেন ম্যালা ম্যালা দিন পর একখান মাত্র বেলা
পেট পুইরা ভালো মন্দ খাইছিলাম বইলা, হেই দোষে
হেই মহা দোষে ধর্মাবতার!


দেন চড়াইয়া ধর্মাবতার, শ্যাষ হইয়া যাক ঐ মাওলার দেওয়া
আরো একখান দোযখের নাহান জীবন।


(১৫.০৬.২০২২)


উৎসর্গঃ কবি ইমামুল ইসলাম মুরাদ, স্নেহে ভালোবাসায়! কেনো? সেটা তোমার কবিতার হৃদয় হরণ করে দেয়া অসীম দুঃখের "ধর্মাবতার! ধর্মাবতার" এর জন্য! সেই প্রেরণায় লিখলাম কিছু, ভালো মন্দের কোনো ব্যাপার নেই, নিজের কবিত্ব তৃপ্তির জন্যই! কিন্তু বাকী জীবন মনে হচ্ছে মনে থাকবে তোমার "ধর্মাবতার! ধর্মাবতার!" এর অনন্য কাব্যিক ধ্বনিময়তা! ধন্যবাদ প্রিয় কবি।