বলােতাে নির্ঝরদা, কেন পান করালে Prosaic হেমলক ?
অথচ সৎ শিক্ষক অথবা সাধুর মতনই দিয়েছো
সত্যের এক অমোঘ চাপড়,
"তোমরা তো লেখো Prosaic কবিতা
আর নেই ঠিকঠাক কবিতার destination-টাও" !


সেটাও, খুব অস্বস্তিতে ফেলে রাখে আমাকে, মাঝে মাঝে
রাগে ছিঁড়ে কুটি কুটি করতে ইচ্ছে হয়, কবিতার নামে অখাদ্য গদ্য;
তবু পারি না, খুব মায়া লাগে,
এগুলো যে, এই অসম্পূর্ণ কবি সত্তাটির গভীর গহীনে
নিঝুম নির্জন দ্বীপের ওপর অনন্ত আকাশের বুকে
সীমাহীন ঝলমলে নক্ষত্রের মতো সুনিবিড় আবেগ!


শুধু ডুব দেই কবিতার অতলান্ত জলে
খুঁজি কবিতার মৎসকুমারী, জলকুমারী,
অনুতপ্ত কোনো রজনীতে চাই, নেমে আসুক
নক্ষত্রলোক থেকে ঝিলমিলে কবিতার পরী !
অথবা চাই এই বাংলার মৃত্তিকা থেকে
গ্রীক পুরাণের মতো গড়ে তুলি এক কবিতার দেবী !
যারা আমাকে কবি করে তুলবে অব্যর্থ
জীবনানন্দ সুনীল অথবা শামসুরের মতো;


আজন্ম বেড়ে উঠলাম এই আমার শহরে
অথচ শামসুর সুনীলের এর মতো
এই প্রিয় শহরটির বেদনা বিষন্নতাও কোনো ঐশ্বর্যময় কবিতা
হলো না একবারো এ অক্ষম হাতে.........
নিয়ন জ্বলা সন্ধ্যার শহর আমার হৃদয় এতো ব্যথাতুর করে দেয়,
অথচ সে অনুভব শৈল্পিক ধ্রুপদী কাব্যিক করে তুলতে পারলাম না !
ভেঙে পড়লো না প্রেমিকার মতো কোনো বস্তুবাদী নারীর হৃদয়
আমার একটি কবিতার সুক্ষ্ণ সমৃদ্ধ অনুভবের সুচারু অভিঘাতে;


বলোতো নির্ঝরদা, তারপরও কেনো কবিতা লেখার দুঃসাহস দেখাই !
Prosaic আর destination ছাড়াই
লিখে কেনো এত নির্ভার হই ? শান্তি পাই ? বিশুদ্ধ হই ?
তারপর ধেয়ে আসে আবার আবারো নতুন অনুভূতি !
যেন একের পর এক তীর ছুঁড়ছে কবিতার কিউপিড,
সে কি একটু পোয়েটিক মাধুরী মিশিয়ে দিতে পারে না ?
তবেই তো বেঁচে যাই তোমার তিরষ্কারের ঐ নিঁখুত শব্দটি থেকে!


নির্ঝরদা সত্য স্বীকার করতে দোষ নেই, নিজেরটা সুদ্ধ,
কেমন যেন এক দৈন্যতার ব্যাধিতে প্রশংসা পুষ্পের প্লাবনে
ডুবাই ভাসাই আমাদের অন্তহীন prosaic কবিতাকে।


নির্ঝরদা, হয়তো তোমার এই prosaic হেমলক
মরে যাবার আগে অনন্ত একবার কবি করে তুলবে আমাকে,
স্বপ্ন নয়, সেদিন ইয়েটস এর সেই ম্লান আকাঙ্খাটির মতন
স্বর্গের চাদরই বিছিয়ে দেবো প্রেয়সীর পায়ের নীচে, কি বলো?


(২৩.০৭.২০২২)