কাল রাত মেধাবী জোছনার প্লাবনে
ভরে গেছে সারাটা পৃথিবী
জোছনার সুধা পিয়াইতে
আমরা দুজন হাতে হাত রেখে
নেমে এলাম পৃথিবীর  মাটিতে;
মাট ঘাট পেরিয়ে রাইন নদীর
তীর ঘেসে চলেছি আর রূপালী
জলের স্রোতে উৎফুল্ল হৃদয় আমাদের;
রূপালী চাঁদটা আরবীয় নারীর
বেইলী নাচের মত রাইনের জলে নাচ্ছে !
আকাশের চাঁদ রাইনের জলে
এতো অপরূপা দেখিনি আর কখোনো
আমরা মুগ্ধ নয়নে শুধু দেখছি
আর ধীর পায়ে তীর বেয়ে হাঁটছি !


রূপালী চাঁদটা যখন আমাদের
মাথার উপরে চলে এলো
আমরা দুজন খুঁজে নিয়ে কোনও নির্জন কোণ
ঘাসের চাদরে চিত হয়ে শুয়ে পড়লাম;
আমাদের হাতে হাত, রক্তের উষ্ণতাকে
অনুভব করে নিয়ে চোখে চোখ রেখে
হৃদি কম্পনকে বুঝে নিতে চাইলাম;
গভীর মমতায় বললাম – আজ তুমি
একটা শিশির মাখা শ্বেতপদ্ম
ও আমকে বল্ল – তুমি একটা শিশির ভেজা
শ্বেত পাথর !
আমাদের হাতে হাত
রক্তের উষ্ণতা আরো বেড়ে যাচ্ছে
তবুও আমরা নিষ্পলক তাকিয়ে আছি চাঁদের দিকে ।


চাঁদটা আস্তে আস্তে  পশ্চিমে হেলে পড়ছে
এক সময় টুপ করে ডুবে গেলো দিগন্তে ।
পূর্ব দিগন্তে ধীরে ধীরে লাল থালার মতন
সূর্য জেগে উঠল আবিরের রঙে;
আমাদের শরীর মেখে নিলো নরম আলো
আমরা নিশ্চুপ পড়ে থাকলাম,
উৎফুল্ল হৃদয় আমাদের;
কূজনে কূজনে ভড়া চরাচর
ঘাস ফড়িঙেরা উঠেছে জেগে
এক জোড়া দোয়েল অবাক বিস্ময়ে
তাকিয়ে আমাদের দিকে
তারপর লেজ নেড়ে নেড়ে
টুং টাং সুর তুলে
কয়েকটা  ঘাস ফড়িং তুলে নিলো ঠোঁটে ।
আমরা হেঁটে হেঁটে চলে এলাম নদীর কিনারে
কিছুটা পথ পেরিয়ে
একটা পাথরের উপর বসলাম
ওর থুথনী আমার হাটুতে
আমার হাতের আঙ্গুল
ওর চুলের ভেতর খেলা করছে !
একবার চোখ তুলে তাকাল আমার চোখে
ঠোঁটে রহস্যময় হাসি;
আমার কাঁধে মাথা রেখে তার চোখ নিবদ্ধ
জলের স্রোতে ।
দুই হাতে আমায় জড়িয়ে ধরে বল্ল –
জানো বহমান নদীর জলের কত বেগ,
মানেনা কোনও বাঁধা ছুটে চলে সাগর সঙ্গমে
কে থামায় তারে !
আমি নিরবে তার শিহরন অনুভব করে নিয়ে
বলিলাম – হ্যা, নদীর এই তীব্র তৃষা অনন্ত !


ঢের সময় পারকরে গোধূলী বেলায়
আমরা ফিরে চললাম লোকালয়
আমদের হাতে হাত শক্ত করে ধরা ।
কিছু দূর যেতেই সে ফিরে তাকালো আমার পানে
ঠোঁটে তার সেই রহস্যময় হাসি
তার হাতের মুঠো খসে গেলো আমার হাত থেকে
চোখে চোখ রেখে সে বলল এবার আসি ।
বিস্ময়ের ঘোর কেটে শুধালাম –
কোথায় যাবে তুমি ?
উত্তরে সে কহিলো – যাকে তুমি কুৎ কুৎে কালো
বুনো ষাঁড় বলে ডাকো আমি তার কাছে যাব
আজ সারা রাত তার সাথে শোব
দেহের সব খুধা মিটিয়ে নেবো !
দুঃখিত !
তুমি ঐ বুড়ো ওক গাছটায় ঠেস দিয়ে
বসে বাঁশের বাঁশি বাজাও ।