সুপ্রিয় খালেদ, তোর কি মনে পড়ে-
কতোদিন আমরা হেঁটেছি কীর্তনখোলার তীরে
খোলা হাওয়ায় তোর বুকটা হালকা করার জন্য;
লেডিসপার্কের উল্টো দিকে পদ্মপুকুরে কতো শতদল
মৃণালের কাঁটার কথা ভুলে নিয়েছি তুলে তার দুএকটা হাতে
মুগ্ধ নয়নে দেখতাম তার রূপ তারপর ক্ষোভে ক্ষোভে
নরম পাপড়ি ছিঁড়ে ছিঁড়ে উড়িয়ে দিতাম হাওয়ায়
কী ভয়ঙ্কর পাগলামী!
যেমনটা তুই করেছিলি রুবার জন্যে
(কী অদ্ভুত মানুষের জীবন!) তুই নগ্ন পায়ে মলিন বেশে
আসতে শুরু করলি ক্যাম্পাসে
বেশ চুপচাপ বিষণ্ন ক্লান্ত মাসের পর মাস
তোর প্রতিজ্ঞা – যতদিনে রুবা তোর ভালোবাসার
স্বীকৃতি না দিবে ততোদিন এমন জীবন যাপন!
কে পারে পাগল বুঝিয়ে মানুষ করতে!
একদিন রুবাকে বল্লাম তোর সাথে আমার কথা আছে
‘বেশ বল’
আমরা দুজন খুঁজে নিয়ে নির্জন বৃক্ষের ছায়া
ওর উজ্জ্বল মুখের দিকে অপলক তাকিয়ে
ধীর অথচ দৃঢ় কণ্ঠে বল্লাম –
রুবা, তুই খালেদকে নিয়ে কতোটা ভাবিস?
ওর মুখের ঔজ্জ্বল্যতা পালিয়ে কালো মেঘের ভিড়
কিছুটাসময় কেটে গেল দুঃসহ নিরবতায়!
রুবা ধরাগলায় বলল-
‘ভেবে ছিলাম তোর নিজের কিছু কথা বলবি একান্তে!
আর হ্যাঁ, খালেদকে বলে দিয়েছি ওর সাথে
আমার কোনোও সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে না’!
আমি রুবাকে অনুরোধ করলাম, একটু বুঝতে চেষ্টা কর-
খালেদের সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে
তোর ভূমিকা মৌলিক এবং খুব বেশি প্রয়োজন!
এবার রুবা ক্ষেপে গেল- ‘ এই যুগে ও মজনু সাজবে
আর আমি লাইলী হয়ে ওর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ব,
সেটা কখনও হয় না মনি! ও আমাদের সবার বন্ধু
আমি ওর ভালো চাই; তুই ওকে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে
সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে বল।
পাগলের বেশ ধরে কোনোও মেয়ের মনে ঠাঁই নেয়া যায় না!
চল এবার ওঠা যাক’। ধীর ক্লান্ত পায়ে
প্রিয় সরকারি বিএম কলেজ ক্যাম্পাস থেকে বেড়িয়ে এলাম......