কৌমূদী তুমি কী আছ ?
তুমি কী আস এখোনো আমাদের পৃথিবীতে
আমাদের শ্যামলা মেয়ে যখন আঁচলে ঢাকে মুখ
তখোনো কি তুমি আস ?
হয়তোবা আস , হয়তো আস না ।
এক কালে তুমি আমাদের পৃথিবীর
সরোবরে কুমূদিনীর মাঝে হারাতে
কার্তিকের রাতে সৌখিন রমণীর
মিহি শাড়ীর মতন কুয়াশার রাতে !
ধবল মেঘেরা তোমাকে ঘিরিয়া
খেলায় মাতিত সারা রাত ধরে
অনেক অনেক বিস্তৃত নীলের মাঝে ;
লক্ষ্মী পেঁচারা উড়ে বেড়াত
গাবের নিবিড় বনে
মেধাবী জোছনার প্লাবনে !


এখন যে আর গাবের নিবিড় ডালে
দেখিনা লক্ষ্মী পেঁচার মুখ ,
রাজহংসী শাদা ডানা মেলে
আসেনাকো আমাদের পৃথিবীর সরোবরে !
মরাল সারস ওরা সব এখন কোথায় (?)
বসেনাকো আর বিলের কিনারে
পৌষ সকালের সোনারোদ মেখে !
খয়েরি রঙের চিল উড়ে উড়ে
কাঁদেনাকো আর নির্জন দুপুরে
ন্যাড়া অশ্বত্থের পানে চেয়ে চেয়ে !


কৌমূদী তুমি কী নেই ?
আমাদের পৃথিবীর এখন ঘোরতর অসুখ
বর্ষীয়সী রমণীর মত ;
হয়তোবা তাই তুমি এখন আর আস না
আমাদের সরবরে নীল জলে
লাল নীল অথবা শ্বেত পদ্ম ফোটাতে !


পৃথিবীর এখন যে বড় দুঃসময় !
রাজার মেয়েকে বাঁচানোর জন্যে
সুপুরুষ রাজারকুমার পায়নাকো খুঁজে
আমাদের পৃথিবীর সরোবরে কোনো লাল পদ্ম !


অজস্র অপার বিপণ্ণ বিস্ময়ে রাজারকুমার দেখে
অগনিত রাঙা রাজকন্যাদের মৃত মুখ !


(বি ঃ দ্র ঃ প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের কিছু বাক্য , বাক্যাংশ
সংযোজন করা হয়েছে ভিন্নার্থে ;তার জন্য কবির কাছে ঋণী
এবং পাঠকের কাছে ক্ষমা প্রার্থী )