ওরে ও সোনার মানুষেরা
আয় ছুটে আয় আয়রে তোরা
দুই চোখ মেলে দেখে যারে
খুপরির ভিতর কাতরায় কেরে !
আল্লাহর সৃষ্টি জীবের সেরা
জঠর জ্বালায় কাঁদে তারা
খুপরির ভিতর মুখ থুবড়ে ,
দুই চোখ মেলে দেখে যারে !


ছেঁড়া শাড়িতে জড়ানো রোগা নারী ,
চুষে শিশু কুঁচকানো চামড়ার বোটা তারি ;
পায়নাকো দুধ জীব নাহি ভিজে
শুষ্ক কন্ঠে তার ঠা ঠা শব্দ বাজে !


জোয়ানমেয়ে গতর বেচে বিনেপয়সায়
মাস্তানের কাছে নইলে যে খুপরি হারায়,
পেটের ভিতর ছাও আসলে তার
ফতুয়াবাজের হাত থেকে নাই যে নিস্তার
রেলসড়কের পাথর সকল মারছে ছুড়ে
সবাই মিলে ঐ ছুঁড়ী্টার দেহজুড়ে !


হায়রে মানবতা নীরবে কাঁদে
সমাজ সংস্কারের কঠিন ফাঁদে !
খুপরির ভিতর মুখ থুবড়ে কে রে কাঁদে !
খুপরির ভিতর মুখ থুবড়ে কে রে কাঁদে !!


মায়ের চোখে অশ্রু ঝরে
চুলায় নাহি হাঁড়ি চড়ে
অনাহারী শিশু জঠর জ্বালায় মরে
মায়ের আঁচল খামচে ধরে,
অসহায় মা কিই বা করে
উনুনে সে হাঁড়ি চাপে শুধু জল ভরে
আঁচে আঁচে শুকালে জল ফের জল ঢালে
আরুঢ় ভনিতা এই ভাবে চলে
অনাহারী চেয়ে থাকে হাঁড়ি’পানে অনিমেষ
জঠর জ্বালার কভু হয়নাকো শেষ !


জাতিগত ওরা নয় একে বারে অবহেলে
জাতীয় নির্বাচন অথবা আসমানী গজব এলে
হুড়াহুড়ি ছুটাছুটি করে সবাই মিলে ,
খুপরিবাসীদের কিছুটা কদর মিলে ;
ব্যানারে ব্যানারে ফ্লাসে ফ্লাসে ওঠে ঝলসে
মানবদরদী সংস্থা রাজন্যবর্গ ছুটে আসে
এক হাতে খিচূরির বাটি অথবা শুকনো খাবার
অন্য হাতে ঝোলানো দু’এক টুকরো ন্যাকড়া কাপড় ;
সেলুলয়েডের ফিতা ভরে রোলকে রোল
যেন এক মহাউৎসব আনন্দ উতরোল ;
চুপকে চুপকে বলে নেতা আদোর সোহাগে –
ভোটটি যেন পড়েগো বাপু আমার ভাগে !


তারপর একদিন থেমে যায় সব
হায়েনার চোখে ওরা হয়ে যায় শব ,
মহাদরদের নায়ক করে বহ্নি উৎসব
অথবা চালায় বুলডোজার
আল্লাহ্‌র জমিনে ওরা যে অবৈধ দখলদার
কী আছে এখানে ওদের বাঁচার অধিকার !!