হে পিতৃপুরুষ ,
আমাকে আর চর দখলের মন্ত্র শিখাইয়না
বা লাঠিয়ালদের তেল চক চকে লাঠির ঘায়ে
কী ভাবে নিরীহ চাষীর মাথা দু’ভাগ করা যায়
সেই বীরের নিপুন রণ কৌশল শিখাইয়না !
তোমাদের এই চর দখলের কূট মন্ত্র এবং
বীর যোদ্ধার নিপুন রণ কৌশল কোনো কিছুই
আমরা শিখতে চাই না , আমরা জানতে চাই না ।


হে পিতৃপুরুষ ,
তোমাদের এই চর দখলের বীরত্বের গল্প
আমরা শুনতে চাই না , আমরা জানতে চাই না ।
ছোট্ট বেলায় দাদীর কাছে বর্গী তাড়ানোর
গল্প শুনতে শুনতে ভয়ে তার কোলের ভিতর
মাথা গুজে ঘুমিয়ে পড়তাম পরম শান্তিতে ;
হে পিতৃপুরুষ , সেই বর্গী তাড়ানোর গল্প বলো !


কি করে একটা ব-দ্বীপ বর্গীমুক্ত হ’ল ,
কী ভাবে এই সবুজ ব-দ্বীপে লাল সূর্য
মুক্ত আলো ছড়ালো ভয়াল অন্ধকারের
ভিতর থেকে জেগে ওঠা লাল থালার মত সূর্য ;
সেই কাহিনী আমাদেরকে জানতে দাও !
যাঁদের বুকের তাজা রক্তে একটা শ্যামল
দেশের মানচিত্র আঁকা হ’ল পৃথিবীর মানচিত্রে
শ্যামা–দোয়েল আর শাপলা–শালুকের দেশ ;
তাঁদের নাম জানতে চাই , জানতে দাও !


হে পিতৃপুরুষ ,
তাঁদের কাহিনী , তাঁদের বীরত্বের গল্প বলো ,
সত্যিকার গল্প যাহা নবপ্রজন্মের জন্য
এক ইতিহাস হয়ে থাকবে অনন্তকাল ধরে’ !
তেজ হীন বিমূঢ় সাধারণ মানুষের বুকে
বর্শারফলা বিদ্ধ করে চর দখলের
রণ কৌশল আমরা শিখতে বা জানতে চাই না !
সবুজ জমিনে লাল সূর্যছবি খচিতে আমার
আত্মত্যাগী বাবা – মা – ভাই –বোন
এঁদের নাম জানতে চাই ,আমাদেরকে জানতে দাও !


হে পিতৃপুরুষ ,
তোমাদের বিকৃত রুচির বিকৃত ইতিহাস দিয়ে
তোমাদের নতুন প্রজন্মকে আর বিভ্রান্ত করোনা !
একদিন আমরা – একদিন আমরা এই বাংলার
পোড়ামাটি খুঁড়ে খুঁড়ে সঠিক-সত্য ইতিহাস
টেনে বের করে আনব-ই !
সেদিন তোমরা রক্ষা পাবেনা ; -
তোমাদের ললাটে ঘৃনার থু থু ছেটাব , তোমাদে মুখে ,
মৃত মুখে কালোমসী লিপ্ত করব – কালোমসী !