আমি অগ্নিকুণ্ড
আজকের টর্নেডো সিডর
আমার ভয়ে ভীতু ঈশ্বর
জানে মানুষের ঐ অন্তর।


আমি অগ্নিকুণ্ড
খোদার জাহান্নামে বসিয়া
খোদাকে থ্রেডে দেই কাঁপিয়া
নিশ্ব খোদা হয় যে ভাবিয়া।


আমি অগ্নিকুণ্ড
খোদার বেহেশতে বসিয়া
বিদ্রোহ করি অসম নীতি
আর পুরুষ কোটা দেখিয়া।


আমি অগ্নিকুণ্ড
আমার জল জল জলন্ত
ঐ মহাভয়ানক উত্তপ্ত
দাউ দাউ করা অগ্নিকুণ্ড
কোনো কালে হয় না শান্ত।


আমি অগ্নিকুণ্ড
আমি ই যুগে যুগে বানাই
ভগবান আরশ পোড়াই
বাতাসে ওড়ার মত ছাই।


অসহায় আছে যত ভাই
সবার মাঝে আমি বিলাই
টন টন মণ মণ ছাই।


কেতুর কুতুর শব্দে ভাই
দাঁত মাজে দিয়ে সেই ছাই
পরে হাসে যেন ফোটে খই।


আমি অগ্নিকুণ্ড
নিথর নিশ্চল মহাভীতু
বিবেক বানাই বীর তীতু
আমার নির্দেশে আঁকে শুধু
মহা কারিগর শিল্পী পটু
হৃদয় মাঝে ভাস্কর্য মধু।


আমার নির্দেশে মরে যদু
সাম্য স্বাধীনতা বলে বলে
রাজপথে হয়ে রণ ক্লান্ত
যদুরা কবু হয় না শান্ত।


আমি অগ্নিকুণ্ড
বীর প্রীতিলতা ওয়েদ্দার
চোর মাস্টার দ্য সূর্যসেন
নব্য ব্রিটিশ বিরোধী কর্মী
করি যে অস্ত্রাগার লুণ্ঠন।


আমি অগ্নিকুণ্ড
নজরুল হৃদয়ের সুর
আমারই অনুপ্রেরণায়
নজরুল বিদ্রোহী সুরের
কবিতা বানায় গান গায়।


আমি অগ্নিকুণ্ড
অামারই উপর ভরসা
করে নজরুল হেসেছিল
জাহান্নামে বসে পুষ্প হাসি।


আমি অগ্নিকুণ্ড
আমি মুক্তিসেনাদের মনে
বসত করেছিলাম বলেই
পাক হায়েনাদের তাড়াতে
তাঁরা করেছিল যে লড়াই।


আমি অগ্নিকুণ্ড
দাজ্জাল বিদ্রোহীরে বসাই
আমার স্তন দ্বয়ের মাঝে
অমৃত সুধা পান করাই
নিরাপদ সে যে মম কাছে।


আমি অগ্নিকুণ্ড
কোনো কালে তো ভণ্ড প্রভুরে
করি নাই পূজা সেজদাহ্
চির উন্নত আমার শির
সব কালে আমি মহাবীর।


আমি অগ্নিকুণ্ড
যুবক যুবতীর যৌবন
আঠারোর প্রেম অকারণ
ষোড়শ ষোড়শীর মনের
অজানা প্রশ্নর প্রস্রবণ।


আমি অগ্নিকুণ্ড
ব্যর্থ প্রেমিকের মাথা নষ্ট
করা দীর্ঘশ্বাস হাহাকার,
নষ্ট থেকেই করি উদ্ভুদ্ধ
করতে বিজয় প্রেম প্রান্ত।


আমি অগ্নিকুণ্ড
ব্যর্থ প্রেমিকার বুকফাটা
আর্তনাদ মন মাঝে থাকা
গুপ্ত আগ্নেয়গিড়ির গোলা
করি সহস্র বছর খেলা।


আমি অগ্নিকুণ্ড
ধর্ষিতা যুবতীর প্রেরণা
আমি দেই ধর্ষকের সাজা
আমার জন্যেই তাঁর বাঁচা
দুঃখের মাঝেই সুখ খোঁজা।


আমি অগ্নিকুণ্ড
যৌতুকের কলে পেষা নারী
বাঁচানোর উঁচ্চ হাতিয়ার
নারী কলম তসলিমার
রাজপথের ঐ চিৎকার।


আমি অগ্নিকুণ্ড
যুবকের যৌবনের বীর্য
যুবতীর জরায়ুর থলি
আমি দুই থেকে তৈরি সূর্য
নব হয়ে ফের পথ চলি।



কাব্যগ্রন্থ :- ( অগ্নিকুণ্ড)