হে কৃষক ভাইয়েরা,একদিন চলার পথে তোমাদের সাথে হল দেখা,
দিনদুপুরে ক্ষেতে পরিশ্রম করার পর আমাদের মাঝে হল কথা।
গ্রীষ্মকালে কঠোর দাবদাহে যারা হয়নি ক্ষান্ত,
তোমাদের নিদারুণ শ্রমের দ্বারা হয়ে ওঠে,
সোনার জমি অসাধারণত্ব।
সমাজের  কথা চিন্তা করে যারা কর্ষণ করে জমি,
সময়ের দাম চুকিয়ে এখন তারা হারিয়েছে
নিজেদের ভাগের ভূমি।
সভ্যতার দেশে চালনার পথে যারা মানুষ গড়ায়,
দিবারাত্রি পরিশ্রম করে তারা সোনার ফসল ফলায়।
অসম্ভবকে সম্ভব করে, তারা নতুন সমাজের পথিক,
জগতের স্রোতকে হার মানিয়ে তারা সৃষ্টি করে নতুনত্বের দিক।


অভাবের তাড়নায় ধুকছে যারা তাদেরকে জুগিয়েছে অন্ন,
অথৈ জলে ভেসে যায়,
যখন তারা পায়না তাদের ন্যায্যমূল্য।
ফসলের হিসাব মেটায় এরা,
সবধরণের কাজ শেষে।
জমিদার-মহাজনদের ঋণের দায়কে ঘুচিয়েছে এরা,
অর্থহীন কারণের লেশে।
বিকলাঙ্গ জড়তাপূর্ণ শহরবাসী তাদেরকে দেয়না সমাদর
তৃতীয় বিশ্বের দেশবাসী হয়েও ওরা কী বুঝেছে তাদের কদর ?
চালিকাশক্তির দেশে প্রবহমান পথে,
যারা মিটিয়েছে ক্ষুধা।
শীর্ণ দেহ, জীর্ণ সমাজ,
তারা কী পায় অমরেত্বর সুধা।
জীবনের জটিল আবর্তে পরেও তাদের মুখে,
সর্বদা ফুটন্ত হাসি।
তাদের আগাম ভবিষ্যতের দায় কী মেটাতে পারবে ঘুমন্ত দেশবাসী ?


জনসাধারণের মুখ চেয়ে যারা হাতে নিয়েছে কাস্তে,
দিকহীন শহরবসীর মুখে অন্ন ফুটিয়েও,
তারা কেন এখন কাদে।
মহাজনরা করছে তাদের অনবরত শোষণ,
তবুও তারা হয়নি কুণ্ঠিত।
হাড়ভাঙা কর্মের পর একটুখানি স্বস্তি,
তারা হয়নি পরিশ্রান্ত।
শহরবাসীদের নিষ্প্রাণ হৃদয় তাদের জন্য হয়না প্রশমিত,
মহাজনদের ন্যায্য পাওনা দেওয়ার পরও,
তাদের হৃদয় হয়ে যায় যেন স্তম্ভিত।
অন্নের হাড়ি মুখে তুলে দিয়েও তারা এখন নয় থেমে,
বিজ্ঞাপনের দেশ এখন তাদের হতে যেন সর্বদা দূরে।
কবে বুঝবে সমাজ, কবে বুঝবে দেশ,
তাদের নিদারুণ দায়।
দুর্ভিক্ষের জ্বালায় ধুকবে যখন দেশবাসী
তখন তাদেরই অন্ন ছেকে খায়।


আমাদের কাছে কৃষক ভাইদের একটি ফরিয়াদ, কবে যে ফিরে পাবে তাদের হারানো সম্মান চিরন্তন,
অন্তরের ব্যথায় দগ্ধ হৃদয়, ব্যভিচারিদের কাছে তারা করে অসহায় আত্মসমর্পণ।
সাম্যের গান গাই মোরা কবে যে দেশে আসবে সমতা,
কৃষকেরা দেশ গড়ার সম্পদ হয়েও কেন নেই তাদের কাছে ক্ষমতা।
ক্ষমতাশালী দুর্বৃত্তরা মাথা চরা দিয়ে উঠছে,
সহায়সম্বলহীন কৃষকেরা দারিদ্র্যতার চরম সীমায় পৌঁছে গেছে।
মানুষের কথা চিন্তা করে যারা গড়েছিল সোনার সম্পদ,
সৃষ্টির লীলায় তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে জনগণের আসর l
কী করে তারা বুঝাবে যে তাদের দ্বারাই গড়ে ওঠেছে সমাজ,
একমাত্র প্রত্যক্ষে বুঝবে তারাই ছিল জনগণের গরজ।


ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের মুখের গ্রাস কেড়েছে যারা,
তারা সিংহাসনে বসে রয়েছে।
অন্নের দায়ভার মিটিয়েছে যারা,
তারা আজ মুখ থুবড়ে পরেছে।
অন্নের ক্ষুধা মিটিয়েছে যারা,
তাদের যেন এখন আর চায়না।
তৃতীয় বিশ্বের অধিবাসী হয়েও,
সমস্ত রকম সুযোগ সুবিধা তারা পায়না।
অঢেল জনসেবা করে যাচ্ছে তারা,
এখন যেন পায়না তাদের অধিকার।
তাদের ছাড়া দেশের মানচিত্র বদলানো যাবে না,
দেশবাসী কী পূরণ করতে পারবে তাদের আবদার ?
সংসারের দায়িত্ব কম করে যারা জাগিয়েছে বর্তমানের সূর্য,
অভাবের জ্বালায় ধুকছে দেশবাসী,
ভূলে যাবে কী তাদের সমস্ত কারুকার্য।
দেশবাসী ও কৃষক হয়ে গেছে যেন দুটি ভিন্নার্থক শব্দ,
তাদের মধ্যে নেই কোনো স্থিতি।
সর্বোপরি সমাজ ও দেশের কল্যাণ করতে গেলে,
উভয়ের মধ্যে গড়তে হবে সম্প্রীতি।