প্রিয় কবি কল্যান চন্দ্র রায় মহাশয়ের প্রকাশিত কবিতা "ধর্ষণ মহাপাপ"


কাম, ক্রোধ আর লোভ
সর্ব পাপের কারণ
সংযত হও, সংযমী হও
পশুত্ব কর নিবারণ।


মাংসের গন্ধ ভুলে যাও
হৃদয়ের ঘ্রাণ নাও...!!!


ছোট এই কবিতাটিতে এক মহান বাণী প্রচারিত। কাম ক্রোধ আর লোভ-এ জগতে যত নষ্টের মূল অথচ তিনটিই মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। কম বেশি প্রতিটি মানুষের মধ্যেই এই তিনটি বৈশিষ্ট্য বিদ্দমান। তাহলে এ নষ্টের গোড়া কি কখনই উচ্ছেদ করা যাবে না। না, তা কখনই সম্ভব নয়।


বংশ বিস্তার প্রতিটি জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে। কাম ইংরাজিতে যাকে বলে সেক্স, অত্যান্ত জরুরী একটি বিষয় ইহা ব্যাতিত বংশ বিস্তার অসম্ভব। তাই কোনও পরিস্থিতিতেই একে দুষ্ট বলা যায় না। যেতে পারে না। তবে বিকৃত কাম কখনই কাম্য নহে। প্রকৃতিক কারণেই পুরুষেরা স্ত্রী লিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং এর উল্টাটাও সঠিক। কাম প্রায় দাবানলের মতোই-নিমেষেই পাশবিকতায় নিমজ্জিত হতে পারে পুরুষ বর্গ। এই বিকৃত কাম বা কামাসক্ততা পশুর পরিচয়, মানবের নহে। সঠিক শিক্ষা প্রকৃত জ্ঞানের অভাবেই একজন পুরুষ পশুতায় নিমজ্জিত হয়। মানব পৃথিবীর জীবসকলের মধ্যে শ্রেষ্ট তম। সুস্থ সমাজ ব্যাবস্থার মাধ্যমে তারা সুস্থ জীবন যাপন করে থাকে। নিয়ম শৃঙ্খলের বন্ধনে আবদ্ধ থেকে তারা সামাজিক সম্মান নিয়ে চলতে ভালোবাসে। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে আবদ্ধ রাখে নিজেদের। প্রায় পুরুষ শাসিত সমাজে নারীজাতের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে অনেক আইন কানুন প্রবর্তন করা হয়। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ কখনই সে গন্ডির বাইরে যেতে পারে না। কিন্ত বর্ত্তমানে আমরা কী দেখি। রাস্তায় বাসে ট্রামে যথেচ্ছ ভাবে ধর্ষণের ঘটনা সংগঠিত হচ্চে। উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে তা। পথে ঘাটে অনিশ্চয়তা বিপদের হিংস্র থাবা। কেন? কেন এ অবনতি। কি শিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছে তারা। একজন নারীকে একদল হায়েনা লুন্ঠিত করতে কুন্ঠিত হয় না এমন কি রক্তাক্ত অর্ধমৃত অবস্থায় চলন্ত গাড়ি থেকে ছুড়ে ফেলে দিতে বা ফাঁস দিয়ে হত্যা করতেও কুন্ঠাবোধ করে না। প্রিয় কবি মানবিক উচ্চারণে সংযমের কথা বলেছেন।কাম সংযম করতে হবে। এমন মানবিক উচ্চারণের জন্য প্রিয় কবিকে জানাই হার্দিক অভিনন্দন।


কথা হলো যারা প্রকৃত শিক্ষার আলোকেই আলোকিত নয়, যারা এধরনের পাশবিক আচরণ করতে পারে সেখানে কী এত সহজেই চিঁরে ভিজবে। না কখনই নয়। আর যেখানে বাণী বা উপদেশ দিয়ে কাজ হবে না সেখানে চাই কঠোর বাঢ়। অনেক কঠিন আইন কানুন করেও যা রোখা যায় না বা যাচ্ছে না সেখানে সমাজ কেই জাগরিত হতে হবে।


আধুনা কালেতে আমাদের মত শিক্ষিত মানুষের মধ্যেও এক ধরনের অনীহা চোখে পরে। হাটে ঘাটে মাঠে জনসমক্ষে নির্যাতন চললেও আমরা কেউ এগিয়ে যাই না। বরং সে স্থান যত দ্রুত ত্যাগ করা যায় সে চেষ্টাতেই ধ্যান দি। এমন কি দূর্ঘটনাগ্রস্থ লোককে সেবা করা তো দূরের কথা পাশ কাটিয়ে চলে যেতে কুন্ঠাবোধ করি না।  সমাজ বিরোধীরা সে কথা হারে হারে জানে আর তাই তো দোর্দন্ত প্রতাপে শত অপরাধ করতে পিছপা হয় না। আইন! আইন কী করতে পারে তাদের। তাদের বিপক্ষে না দেয় কেউ সাক্ষী না চায় সে পানে। তারপর দুর্নীতিগ্রস্থতা ও আরও অনেক ব্যাপার রয়েছে। তাই হাজার কুকর্ম করেও তারা বুক ফুলিয়ে চলতে পারে সমাজে।


এ আঁধার থেকে বেড়োতে গেলে চাই সামাজিক উত্থান। জন জাগরন। দশে এক হলে কতক্ষণ লাগে এসব রুখে দিতে। না, আমরা পারিনা তা আর কোনও দিন পারবোও না। এসব কেবল হলিউড আর বলিউল ফিল্মেই সম্ভব। তবুও আহ্বান রেখে যাব-উঠুন জাগুন দেশ আর জাতি মা বোনেদের বাঁচান। নিজেও সংযত হোন আর সংহত করুন যে কোনও এমন নির্দয় প্রচেষ্টা।


ক্রোধ একটি ব্যাধি যদিও সহজাত প্রবৃত্তি। প্রকৃত জ্ঞানে এ রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। একটি মন্ত্র দিচ্ছি । যপ করুন দেখবেন সেরে গেছে। মন্ত্রটি হলো,"যেখানে রাগ করবেন সেখানেই ক্ষতি"। মিলিয়ে দেখে নিন সত্যি কিনা। নিজের শরীরের ক্ষতি, ব্যাবসায় ক্ষতি, সম্মান সম্পর্কের ক্ষতি, নিজে নাই বা করলেন।


লোভ ত্যাগ করা যায় একমাত্র আধ্যাত্মিক চিন্তা ভাবনায়। ভাবুন তো কী নিয়ে যাবেন ওপরে। সুখ শান্তিতে জীবনটা কাটিয়ে দিতে পারলেই তো অনেক।


তাই প্রিয় কবির কবিতাটি অনুধাবন করবার চেষ্টা করুন। সংযত হতে পারলেই সুখ শান্তি লাভ করা যায়।


মহতি উদ্দেশ্যে সুন্দর বাণী কবিতায় প্রচার করবার জন্য প্রিয় কবিকে জানাই হার্দিক অভিনন্দন। আপনাদের প্রিয় সঞ্জয় কর্মকার।