“কথাকলি”


কি জানি কি হবে ভবে-ক্রন্দন অবিরল,
বয়ে চলে নিশিদিন, হিংসা ও
কোন্দল।
দুদিনের জীবনেতে আশ কারু নাহি মিটে
ক্ষর বায়ু মন্দ;
দিকে রবে ঘুরে ফিরে, দ্বেষ আর
দ্বন্দ্ব।
জাতি দ্বেষে ভেসে যায়, বহ্নি ও লহুস্রোত,
বিদ্বেষ গনগনে রক্তেতে
ওতপ্রোত।
আমি কবি অনুভবি অনুভবে পল ভুলি,
বেদনাতে হৃদপ্রাণ-অশ্রুতে
কথাকলি।
লতপত হিংসাতে অস্ত্র সে মাথা তোলে,
মানবতা দুর গত, বেদনার
ধরাতলে।
শিশু কচি নাই প্রাণ কথাকলি দূর গত,
শ'য়ে শ'য়ে লাস সারি
কেহ নহে বিব্রত।
আমি কবি অশ্রুতে লতপত লিখে চলি,
ধারা বহে কপোলেতে
বিদ্রোহ সুর তুলি।
জনে জনে ডাকি পল অস্ত্র সে হাতে নিতে,
যেন প্রাণ ডাকে মোরে, প্রতিরোধ
গড়ে দিতে।
আজি প্রাণ ঢঙ্কা সে শঙ্কা সে গগনেতে,
সংহারিতে যেন মন, আজি পল
লগনেতে।
জাগো দেশ জাগো ধরা ত্বরিত সে মুষ্টিতে,
ধর প্রাণ আজি মন, পণ ধরো
দৃষ্টিতে।
বিবেকের পানে চাও অশ্রু কি বান নাই,
ধেয়ে আসে তোমা পানে
কান্না কি শুন নাই।
কি হবে কি মায়া কায়া নাই যদি দিতে পারি,
কবচ সে কুন্তল, শিশুপ্রাণে
নীড় গড়ি।
এক ধরা বারুদেতে শিশু কচি কাঁদে প্রাণ,
মাতা আর ভগ্নীর-শালিনতা
অবসান।
রক্ত কি ফোটে না'কো ফুলকিতে ক্রোধে প্রাণ,
বিঁধে কিগো হৃদে আজ
শনশনে গনগন!
কেন তবে শুনশান স্তব্ধ সে হৃদ মন,
অশান্ত লহরেতে, চলো দেই
কোরবান।
রিক্ত সে ধরা মাঝে জীবনের গীত গাই,
অসহায় নিপিরীত, চলো আজি
পাশে যাই।
ধর্মের কারবারী অধর্মে মাতে যারা,
চলো আজি বধিবারে, আজি
প্রাণ করো ত্বরা।  
সামাজিক হলাহল বিষ আর বাস্প সে,
নিবারনে চলো আজি, দেশ হতে
আর দেশে।
ধ্বংস ও সৃজনেতে চলো গড়ি সুমধুরা,
এক জাতি এক প্রাণ, শান্ত
সে সসাগরা।  


“সুতনয়া” (এমাসের ৮ তারিখে নার্সিং হোমে বেডে শুয়ে লেখা, হাজার লাইন লিখব বলেছিলাম। ৮০০ তে ছেড়ে দিয়েছিলাম। আজ নিয়ে খেয়াল আর ৫ পর্ব বাকি আছে। এ কয়দিনে শেষ করব কবিতাটি।)


দিক দিগন্ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে পর আজ,
আগুন জ্বেলে দাও সুজন মাঝিদের গড়
স্বপ্ন মহল। জানিয়ে দাও পুরুষশাসিত সমাজে
নারীশক্তির অবস্থান।
দিক বিদিকে উদ্ভাসিত হোক স্বর্ণ আলোক
দ্বৈরথে কম্পিত হোক মেদিনী,
শুভাষিনী সুললিত ভাষীনিম
মহাভৈরবে নিনাদিত হোক ধরা।
শোভিত হোক রূপ বীরঙ্গনা,
জাগ্রত হোক সমাজ আর হীনমন্যতায়,
লোল্যুপ সুজন মাঝিদের গড়া
একতন্ত্রীয় সমাজ ব্যাবস্থা।
সুতনয়া তোমার পদভরে কম্পিত মেদিনী
থর থর কাঁপছে ওই সোনার লঙ্কা,
সোনার তরী বিগলিত প্রায়,
আর সুজন মাঝি আর তার
ললনার সারি। সুতনয়া ধ্বংস করো,
ধ্বংস করো আজ।
রূপ তোমার সিংঘবাহিনী, মা দূর্গা
মহিসাষুর মর্দিনী, খর্গ ধরো সুউন্নত,
শত বেশ ধারী সুজন মাঝির দল,
রূপ হতে রূপ, অবশেষে প্রকটিত হবে
মহিসাষুর।
যুদ্ধ করো সুতনয়া, যুদ্ধ করো,
যুদ্ধ করো আজ।


“নারী মাতা কল্যাণে”


এমন একটি নারীর জন্ম নিক আজ
যে কিনা পুরুষের বাড়া,
দিনের আলোকে খুন করে দেবে
ধর্ষক যারা।
কেউ কি তোমরা সাক্ষী দেবে তার কূকর্মের,
তাহলে সাজা কে দেবে তারে
ধর্মের!
এক এক করে খুন করুক সে সামাজিক কীটদের,
দিনের আলোয় সকলের
চোখের সামনে।
হে ঈশ্বর পূর্ণজন্মে আমায় নারী কোরো
নারী মাতা
কল্যাণে।


“কোলকাতা আছে কোলকাতাতেই”


কোলকাতা আছে কোলকাতাতেই,
ভিড় থিক থিক গাড়ির মেলা হকার ফুটের রাজ,
হরেক কিসিম মানুস সেথা আর
ভিক্টোরিয়ার তাজ।
ধর্মতলায় সন্ধ্যাবেলায় রং তামাসার আসর চলে,
আর হেঁদুয়ায় পার্কে মাঠে, দালাল রাজ
পাইসা তোলে।
হাওরা ব্রীজে গাড়ির জ্যামে চাক্কা ঘোরা কঠিন অতি,
আর ফিঙ্গে ব্রীজটি দোলায়, গোপাল বাবুর
কেরামতি।
ট্যংরাতে ভাই ঘুপচি গলি ইলেকট্রিরির লোহার পোল,
আর বানায় হেডার তারি, ভীষন রকম
শোরগোল।
ইজরা স্টীটে বিজলি বাজার বাগরিতে ভাই রকমারী,
রড়বাজার, কী পাবেনা ঝগড়া ঝাটি
ঝকমারী।
আলিপুরে জন্তু জানো, নিক্কোতে ভাই সাগর দোলে,
হেথায় যাওয়া ঝক্কি ভারি, গেলেই খালি
হয় রে থলে।
তাও ভাল ভাই রামকৃষ্ণ, করুণাময়ী মায়ের থান,
নৌকা ভেসে উল্টাপানে, বেলুর মঠের
জয়োগান।
শিয়াল দহ ডিমপট্টি আর্মহাস্ট স্টীট হোটেল ভরা,
একটি ঘর পাবে নাকো, আইডেনটি
প্রুফ ছাড়া।
গলি গলি শোর হ্যায় শুনবে যদি কান পাতো,
লাস্যময়ী হাস্যবদন জাল বিছানো
ফাঁদ পাতো।
আর দুরেতে আর যাবোনা পাতাল রেলেও না,
ধাপার মাঠের পাশে গেলে
গুলায় কেমন গা।
পূর্বাচল শান্ত অতি স্টেডিয়ামে চলছে খেলা,
বাবুঘাট ঘাটেই থাক আর ইডেনের
ফাগুন মেলা।
প্রাণের ধারা কোলকাতা বয় আর কাঙালি ফুটে,
কোলকাতা আছে কোলকাতাতেই
উল্লাস আর দুখে।


“জব্দ”  


ঝঙ্কারেতে যখন বুক
কেঁপে ওঠে শব্দ,
বুঝতে কী আর দেরী সখী
জামানতই
জব্দ!


সোহাগ মাখা নরম সুরে
যখন তোমার সুরটি মধুর,
পকেট আমার কেঁদে ওঠে,
বিষাদ লাগে প্রাণটি
বিধুর।


আর পকেটে যখন দেখি
টাকাগুলির ডানা গজায়,
বুঝতে কি আর দেরী সখী,
বারোটা আমার কে
বাজায়।