সাহিত্য কী? আমার অনুভূতিতে উপলব্ধিতে যা বুঝেছি ব্যাক্ত করবার চেষ্টা করছি। সাহিত্য মানে কারুময়তা, সাহিত্য মানে শিল্প।


একঢেলা মাটির মূল্য আছে কি? সেই মাটিটাই যখন কারুময়তায় ও শিল্পের সমাহারে  সুন্দর কারুশিল্প হয়ে ওঠে তখন তার মূল্য অনুধাবন করা যায়। সেই মাটির ঢেলাকে বিভিন্ন শৈল্পিক রূপ দেওয়া হয়। রং তুলির সমাহারে তাকে এমন আকর্ষণীয় করা হয় সেই মাটির ঢেলাটিকেই দামদড় করে আমারা কিনতে বাধ্য হই।


রং তুলির কী বা দাম। কিন্তু সেই রঙ তুলির সমাহারে যখন মোনালিসার পোট্রেট তৈরি করেন লিওনার্দ্র দা ভিঞ্চি তখন তা হয়ে যায় অমূল্য সম্পদ।


কথা বা বাক্য হল মাটির ঢেলা বা রঙ তুলি। আর তা দিয়ে কারুময়তার সাথে শৈল্পিক টাচে যখন গড়া হয় এমন কিছু যা দৃষ্টি আকর্ষণ করে হৃদয় অনুভব করতে পারে আর বারে বারে তা পাঠ করতে ইচ্ছে হয়, যেন মনের মণিকোঠায় তা গেঁথে যায় তা হল সাহিত্য।


রবি ঠাকুরের কুমোর পাড়ায় গরুর গাড়ি, কবে পাঠ করেছি অথচ আজও অম্লান হৃদয়ে, আরও কত কবির কত কবিতা গুলে ভাতে খেয়েছি।


সাহিত্য মানে শিল্প। সাহিত্য কর্কশ হবে তা কল্পনাতীত।


আজকাল ব্যাস্ত জীবন। এত ব্যাস্ত যে লোকে রেডিমেড জামাকাপড় কেনে । বানাবার সময় নেই। অল্প সময়ে বেশি কিছু চায় মানুষ। সময়ের বড়ই অভাব। জীবন জীবিকার স্বার্থে কারুরই দুদন্ড সময় নেই বিলাস আয়েশীতা করবার। আমি মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ের কথা বলছি। সে স্থানে দাঁড়িয় কি করে আপনি ভাবতে পারেন আপনার লেখা কর্কশ কিছু বুলি যা ধাধার সামিল, তা পাঠ করতে উদ্যত হবে তারা, আর ঘন্টার পর ঘন্টা চিন্তা করবে , আপনি কী বলতে চেয়েছেন।


তাই তো পাঠক নেই আধুনিক কবিতার। কবিকূল বাদ দিয় শতকরা একজনও নেই।মাটির ঢেলা তালগোল পাকিয়ে আপনি আজকালকার ব্যাস্ততম যুগে পাঠক খুজছেন!


কবিতা, সাহিত্য উপন্যাস লেখা হয় এনটারট্রেইনমেন্ট এর জন্য আর পাঠক পাঠ করে রিলাক্স এরে জন্য। আপনি তার মাথা ব্যথার কারণ হয়ে উঠবেন আর তিনি গোগ্রাসে সে লেখা পাঠ করে টেনশান নেবেন , আপনি কী লিখেছেন তা বোঝবার জন্য, তা কী আর হতে পারে।


অনেক কবিকেই বলতে শুনেছি, যা সহজ বোধ্য তা নাকি কবিতাই নয়। আপনি এমন কিছু লিখে দেবেন পাঠক পাঠ করে ঘন্টার পর ঘন্টা , দিনের পর দিন নাকি চিন্তা করবে আপনি কী বলতে চেয়ছেন। তাহলে নাকি কবিতা হয়।


তাই তো কবিতা আজ সাক্ষাত যম পাঠক কূলের কাছে। যত দূরে থাকতে পারে তত মঙ্গল। তারা পাঠ করতে চেয়েছিল তাই তো তারা জানতে পেরেছে বর্ত্তমান কবিতার হাল হকিকত। কবি বলে আজ সমাজে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগে।


আমি বলছি না যে অন্তমিলে লিখতে হবে কবিতা। আমিও কবিতা লেখবার প্রয়াস করি আর তাই একজন একনিষ্ট পাঠক হিসাবে সারাদিনে বহু বহু কবিতা পাঠ করি।


আর তাই তো কবিতা নিয়ে চিন্তা করি আর কবিতার হাল হকিকত জানাতে বাধ্য হলাম। অনেক অনেক শুভকামনা সহ আপনাদের প্রিয় সঞ্জয় কর্মকার।