সরল সে এক পল্লীবালার শৈশবে যাই ফিরে,
বাস ছিল তার বাংলাদেশের সাতকাছিমার তীরে।
নয় সে গুণী, হয়তো বিশেষ চিনবে না কেউ তাকে,
দুঃখিনী এই কন্যা হারায় বাল্যে আপন মাকে।
সে-ই তো ছিল সবার ছোট, দাদা দিদির পরে,
তাদের স্নেহের একটু কণা হয়তো পেত ঘরে।
এমনি করেই বকুলবালা উঠল যখন বেড়ে
বাঁধতে প্রেমের ছোট্ট বাসা আসল সে দেশ ছেড়ে।
চোখের জলে দেশ বিভাগের যন্ত্রণাকে ভুলে
ছোট্ট ঘরে উঠল রঙিন খুশির দোলায় দুলে।
কাটছিল বেশ দিনগুলি তার দুঃখ সুখের মাঝে,
উঠল মেতে নিত্য দিনের ঘরকন্নার কাজে।
পুত্র পেল কন্যা পেল, ভাসল খুশির স্রোতে।
সকল সুখে পূর্ণ সুখী পারল কি সে হতে?
সুখের খোঁজে মুখটি বুজে শুধুই খেটে খেটে,
রিক্ত মনে দেখছে এখন জীবন গেল কেটে।
তবুও তার মাতৃ-হৃদয় তেমনি মায়ায় ভরা,
অন্যকেই করতে সুখী এখনও কাজ করা।
শরীর গেছে, মন ভেঙেছে, প্রদীপ নিভে আসে,
আজও সে মা স্বার্থ ভুলে শুধুই ভালোবাসে।
এমনই এক মায়ের কথা বলছি কেন আমি?
তার বেদনা, তার কথা যে আমার চোখে দামী।
স্নেহের সাথে জন্ম দিয়ে, স্তন্য দিয়ে মুখে
এনেছিল সে-ই তো আমায় এই ধরণীর বুকে।
তাই ভাবি আজ, কাব্য লিখি যতই লেখনীতে
পেরেছি এই মাকে আমার কতটা সুখ দিতে!
           ---------------