অতটুকু মুখে বাবুজি ডাকিয়া ভরিয়া দিতো যে বুক,
সারা মুখ হতে মায়া ঝরিতো প্রাণে পাইতুম সুখ।
এ ঘর ও ঘর ঘুরিয়া চলিতো ঝুনঝুন বাঁধা পাঁ'য়ে,
যেই দেখিত কোলেতে চাপিতো যতক আছে এ গাঁ’য়ে।
বাবুজি ডাকিয়া বলিতো আসিয়া আর হবে নাকো ভান,
লাল জামা কিনে দিতেই হবে এবার বেঁচিলে ধান।
দুহাতে জড়ায়ে চুমুটি কঁপালে আঁকিছি দরদ দিয়া,
এবার মাগো ভুল হবে নাকো আইবো জামা’টি নিয়া।
যেদিন যাইবো গঞ্জের হাঁটে এক সপ্তার লাগি,
শেষ বিদায়ে পেরেশানি হলেম ছোট্ট মায়েরে ডাকি।
এ ঘর-সে ঘর সবেক খুঁজি কান্নার শুধু বাকি,
এমন সম কোথা হতে এলো বাবুজি-বাবুজি হাঁকি।
বুকে জড়াইয়া কান্না ছাড়িছি ফিরিয়া পাইছি প্রাণ,
এমন করিয়া কোথা যাবে নাকো মরিয়া যাইবো বাপজান।
দুদিন বাদে খবর আসিলো যেতে হবে এখুনি বাড়ি,
মায়ের আমার কালা জ্বর লাগিছে আসিছি সে দিন ধরি।
কিছু না ভাবিয়া নৌকা চাপিছি লাল জামা হাতে নিয়া,
বাড়ির পথে কান্না শুনি শ্বাস কেনো আসে নিভিয়া।
দৌড়ে ছুটিয়া উঠোনে থমক সাদায় পেঁচানো লাশ,
বিলাপে বিলাপে আকাশ ভারি;বুঝি আমার সর্বনাশ।
লাল জামাখানা হাতে লইয়া সবেক আঁধার দেখি,
কাঁদিতে পারিনা ঝাঁপিতে পারিনা কেবল মায়েরে ডাকি।
ও মাগো তোর শখ যে পূরণ হলোনা আমার হাতে,
ফিরে দ্যাখ তোর লাল জামা এই পরে দ্যাখ কেমন লাগে!