কখনো যদি ধৈর্যশীলদের তালিকা করি
তবে প্রথমে যে মানুষটিকে রাখব
তিনি হলেন বাবা,


ছোটবেলা থেকেই বাবা কে দেখে আসছি
বড্ড অদ্ভুত এক মানুষ,
যতই দেখতাম ততই অবাক হতাম।


খুব কাছ থেকে দেখেছি মানুষটাকে,
দেখেছি তার কপালের প্রতিটি ভাজ,
দেখেছি প্রতিটি ভাঁজের ভিতর
লুকিয়ে থাকা সহস্র অন্ধকার,


বাবারা না হাসলে নাকি সন্তানের
আনন্দের পূর্ণতা আসে না
তাই শত হতাশার মাঝে বাবাও হাসতো,
হাসতো আমাদের প্রতিটি উৎসবে,
প্রতিটি আনন্দে।


ছেলেবেলায় দেখেছি খুব ভোরে
কোথায় যেন হারিয়ে যেত মানুষটি  
সন্ধ্যাবেলায় অন্ধকার ঘনিয়ে
আসার সাথে সাথে
বাবারও ফের আগমন ঘটতো,
প্রতিদিন-ই আমাদের জন্য নিয়ে আসতো
টুকরো একটু সুখ,
অবুঝের মতো যখন সুখের দাম
জানতে চাইতাম বাবা তখন হেসে বলত
সুখ কিনতে টাকা লাগে না,
মন লাগে।
পরে যখন একদিন জানতে পারলাম
মানুষটি তার স্বপ্নগুলো বিক্রি করে
সুখ কিনে দিত আমাদের,
তখন জানতে খুব ইচ্ছে হল
বাবাদের মনটা না জানি কতো বড়!


বাবার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতো কিনা
তা জানা নেই
তবে মা কে বলতে শুনেছি
মানুষটার চোখ দিয়ে নাকি
প্রায় রক্ত ঝরত।


ধীরে ধীরে মানুষটিকে
যখন জানতে শিখলাম ,বুঝতে শিখলাম
তখন-ই মানুষটির সকল রক্ত মাংসের
ক্ষরণ শুরু হল
শেষ দিকে শুনেছি মানুষটার
ফুসফুসেও নাকি পঁচন ধরেছিল,


শত ঝড়ে যে মানুষটি  প্রাচীর হয়ে
আগলে রাখতো আমাদের
সেও একদিন ধাবমান বস্তুর মতো
মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতে লাগলো,


শুনেছি মৃত মানুষেরা
জীবিতদের স্বপ্নে খুব কম আসে
কিন্তু আমাদের প্রতিটি স্বপ্নে
বাবা আসতো,সাহস দিত,
বাবা মানুষটা যে এমনি
সন্তানের জন্য কতো
নিয়মও ভাঙতে পারে।