'ঘোমটা'
কবি - সোমা বিশ্বাস
ঘোমটা ঢাকা নতুন কনে
         লক্ষ্মীমন্ত বৌ,
সারাক্ষণই 'ঘোমটা ঢাকা
         মুখ দেখেনি কেউ ।
ট্যাপার ছেলে খ্যাপার গিন্নি
         ক্ষ্যান্তো বুড়ির নাতনি বিন্নি,
মিষ্টি কথায় মন ভোলায়,
         রান্নাঘরে খুন্তি নাড়ায় ।
কাজ করে বেশ, রাঁধে ভালো,
         ঘরে যেন জ্বলছে অালো ।
লক্ষ্মীবধূর নাম ছড়ালো
         দশপাড়াতে দেখতে এলো ।
" শুনেছি খ্যাপা তোর বৌটা
         কখনো দেয় না মুখ ঝামটা,
লক্ষ্মীমন্ত বৌটা খাসা
        অালো করেছে তোর বাসা,
গলার স্বর কোকিল কন্ঠী
        রাঁধুনিতে দ্রৌপদী ।
মুখ দেখবার শখ হয়েছে,
        দেখি কেমন বৌ হয়েছে !"
বৌ শুনে তো পালিয়ে বেড়ায়,
        গ্রামবাসীও দাপিয়ে বেড়ায় ।
মুখ দেখবেই, মুখ দেখবে
       নাহলে একঘর করবে ।
তবুও বৌ নয়তো রাজী,
       ভাবছে খ্যাপা ডাকবে কাজী ।
কাজী শুনে সব, বেঁকে বসে
       বৌ দেখবে গামছা কষে ।
ভয়েতে বৌ পালাতে চায়,
      গ্রামবাসীও সাত-পাহারায় ।  
হঠাৎ উঠোন ঝাঁটাতে গিয়ে
      বাতাস বইছে তুফান নিয়ে,
উড়ালো বধূর ঘোমটা খানা
      মানুষ তো নয়, পেঁচার ছানা !
চোখ দু'খানা ভাটা ভাটা
      নাকটা যেন গাজর গোটা !
কান গুলো বেশ বড় বড়
      জিভ হবে দশ হাত বা বারো ।
বৌ দেখে তো চোখ কপালে
      গ্রাম ছেড়ে সব দৌড় নেপালে ।
থাকেনা অার কেউ সে গ্রামে,
       নতুন বৌটা মরলো হামে ।
শূন্য পাড়া.... শূন্য গ্রাম....
       গাছ ভরেছে কাঁঠাল, জাম,
অাম, লিচু অার অানারসে.....
     বৌ এখনও লক্ষ্মীবেশে ।"