আজ প্রায় দু মাস এই সাইটে আছি,, নবীন কেবল এই সাইটে তা নয় লেখার অভিজ্ঞতার বিচারেও।। বহু কথা মুখে এসেও কেমন জানি পানের পিকের মত গিলে ফেলতে হয়।। আসলে ভয় বিতর্কের ভয়,, তবু আজ বলছি প্রিয় কবি ও আলোচক এবং শিক্ষক   শ্রী যাদব চৌধুরী মহাশয়ের আলোচনা প্রসঙ্গ টেনে। কারণ আমার একার বুকে হয়তো এত এলেম নেই।।


আসলে সৌখিন কবি বলে কিছু আছে বলে আমার বিশ্বাস হয় না।। চোরা স্রোতে উচ্চাকাঙ্ক্ষা বয়।। সকলেই সিরিয়াস কবি, শুধু মাত্র তারা বাদ যারা একে বারেই অনিয়মিত( তবু হলফ করে বলা যায় না, হয়তো তিনি নিজের মতো অন্য কোথাও নিজের কাজ একমনে চালিয়ে যাচ্ছেন ) ।।


তাহলে প্রশ্ন হলো এই সৌখিন কবি বিষয় টা কি?
কিছুই না এটা হলো তৃতীয় হাত অর্থাৎ অজুহাতে এবং সকলেই কমবেশি এই হাত ব্যাবহার করে থাকেন ( আমি নিজেকে বাদ দিচ্ছি না) ।
কখন ব্যাবহার করেন?
নিজের ত্রুটি ঢাকবার জন্য ( যদিও ত্রুটি বিষয়টি আপেক্ষিক ব্যাপার)।
কেমন ত্রুটি ?
কবিতা বিষয়ে ত্রুটি।।


কিছু উদাহরণ রাখলে সুবিধা হয়।।


এই সাইটে অনেক কবি এখনও মঙ্গল কাব্য বা ভারতচন্দ্রের সময়ে পরে আছেন আবার কেও বিহারীলাল কে আঁকড়ে বসে আছেন আবার কেও ঈশ্বর গুপ্তর ধাচে কিছু বাণী প্রচার করেন,, কেও আবার ভাবেন কবিতা মানে কেবল রবীন্দ্র নাথ আর নজরুল বাকি সব ফাজলাম। কেও বা জীবনানন্দ কে বুঝতে আরম্ভ করেছেন, কিন্তু কাব্য নদীর এই ধারা পরিবর্তন কে অনেকেই স্বীকার করতে চাননা।।
সময়ের সাথে এই পরিবর্তন অবসম্ভাবি এটা মেনেনিতে খুব কষ্ট হয়, কেননা এতে তারা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন। তাই যখন কোনো সমালোচনা হয় তখন সৌখিন কবির তকমা লাগিয়ে নিজেদের আড়াল করবার প্রবল প্রচেষ্টা থাকে।।
আর যারা এই প্রচেষ্টা করেন না আমি তাদের সাধুবাদ জানাই।
এমন একজন কবি আমার অভিজ্ঞতায় কবি শ্রী সঞ্জয় কর্মকার,, ওনার কাব্য চর্চায় ভাবনার পরিবর্তন এসেছে, মূলত পুরনো পন্থী এই কবি তাল মিলিয়ে নতুন কাব্য শৈলী রপ্ত করবার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন।। তাই অন্ত মিলে স্বচ্ছন্দ কবি গদ্য কবিতায় কলম চালাতে কোনো রকম কুণ্ঠা বোধ করেননি। কবির এই প্রকৃত কবি মনকে আমার সশ্রদ্ধ অভিনন্দন।।


আর যারা ভিন্ন ধারার কবিতা লিখবার প্রচেষ্টা করেন হাতে গুনে কয়েক জন বাদ দিলে বাকিদের দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয়,
কবিতা যদি নতুন সৃষ্টি হয়, যদি এখানে সৃজনশীলতা থাকে, তবে কেনো নদীর জল বয়ে যাবেনা? একই জায়গায় দাড়িয়ে একোন সৃষ্টিশীল ভাবনা,, যেখানে ভিন্ন ধারায় ভাবলে তাকে একঘরে করা হয়।।
অচেনা পথে পুরনো ব্যাকরণ কি সব সময় কাজ করে? যখন কেও নিজের রাস্তা নিজে বানিয়ে নেয় তখন কি আগে থেকেই জানা থাকে সামনে কি অপেক্ষা করছে? পুরোটাই অনুভূতির হাত ধরে এগোয়।।
এই অচেনা রাস্তাকে বোঝার চেষ্টা না করে, সেখানে আরও কত সুন্দর পথচলা আছে সেটা না বুঝে সেটাকে ব্যাকরণ বহির্ভূত ও অকবিতা বলে সেই কবিদের একঘরে করে দিলে ভীষন যন্ত্রণা হয়।।


আমি ব্যাক্তিগত ভাবে গদ্যছন্দে কবিতার নিয়মিত ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি,, কখনো কিছু কবিতা বেশ লাগছে নিজের কাছেই,, কিন্তু এই সাইটে খুব সামান্যই পাঠক কবি আছেন যারা কবিতা পাঠের পর গঠন মূলক সমালোচনা করে থাকেন। প্রিয় কবি রিনা তালুকদার -এর একটি মাত্র মন্তব্যে আমি বুঝেছিলাম আমার কবিতা অন্তত 40 বছর পিছিয়ে আছে, কিন্তু এরকম সমালোচনা কজন করতে চায়? সকলেই কেমন যেন মোহজালে আবদ্ধ হয়ে মিথ্যা স্বর্গে বাস করতে চায়। কোনো আলোচনা নেই, কি করে বুঝবো যা লিখলাম সেটা আদেও কিছু দাড়ালো কি না?


আমার মতে সৌখিন কবি বলে কিছু আছে এটা সন্দেহের বিষয়, যে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হবেন তিনি কবি, আর যারা সমালোচনা অস্বীকার করে কুয়োর ব্যাঙ হয়ে থাকেন দিনের শেষে হাত যদি ফাঁকা তবে বলে দেবো আমি তো সখের কবি।। আমিও হয়তো সেটাই বলবো ব্যার্থ প্রচেষ্টার পর উপকূলে দাড়িয়ে, কিন্তু আমার কবিতার কঠোরতর সমালোচনাকেও আমি স্বাগত জানাচ্ছি ( গঠন মূলক কথাটা বললাম না কেননা সেটাও ভীষন আপেক্ষিক, একজনের যেটা গঠন মূলক মনে হয় অন্যর নাও মনে হতে পারে) ।
তবে অনুরোধ কোনো কবিতাকে অকবিতা বা কবিতা হয়নি বলার কাজটা করবেন না।