নাটকের শেষ দৃশ্যের পর বাড়ি ফেরার পথে
গাছের নিচে ফুটপাতে সংসার দেখেছি।
সমস্যার মাঝেও বেঁচে আছে,
ঝগড়া আর হাসিকান্না নিয়েও
সংসার করছে কত মুখ। কত সুখ।
তাহলে আমার কিসের অসুবিধা।
নাটকের সেই বিবেক ভাবনা
বাসের সীটে আমার পাশে এসে বসে।
কলকাতা তো জলপাইগুড়ি নয়
যে টোটোতে উঠলাম আর গজলডোবায়
তিস্তা ব্যারেজে পাখি দেখতে চলে গেলাম।


নাটকের মুখোশ, কান্না মুখোশ
সবই আমরা প্রতিদিনের শহরে
ছড়িয়ে রাখি। মুখোশ পরে নিতে
অসুবিধা হয় না তেমন ভাবে।
নাটকের মাঝে গাছবাড়ি
জেগে ওঠে নিজের মতোই,
নিজের ভাবনা চিন্তায়।


গাছের তলায় সংসার,
এত কষ্ট তবু তো সামলে নিচ্ছে,
আর আমার ঘরকন্না সামলাতে
এত কষ্ট, এত নদীর মতো বহমানতা
কেন কিং সাহেবের ঘাটে
আত্মহত্যা করতে যাওয়ার স্বপ্ন
ঘিরে ধরছে আমার ভাবনাকে।
কেন এসমস্ত হচ্ছে,
কী ভাবে হচ্ছে,
কখন হচ্ছে,
কিছুই তো স্পষ্ট বুঝতে পারি না।


গাছবাড়ির দিকে তাকিয়ে
আবার সন্তানসুখ, সন্তান হাসি, স্বামী
সমস্তটুকু মানিয়ে গুছিয়ে নিতে পারি না!


এই যে নাটকের মতো
হাসপাতালে বসে আছি, প্রিয়জন সুস্থ হবে বলে
সে কী কেবলই নাটক!


গাছবাড়ির ওরা কী কখনও নাটক দেখেছে!
ওরা চিৎকার করে, মনে ক্ষোভ গালাগালিতে কান্নায়
উত্তাল করে দেয় সমুদ্ররাশির স্বপ্নকে।


আমার ঘর, সংসার, এসব কিছু
গাছের মতো জেগে উঠতে পারে না!


আমার বাসা, ভালো বাসা,
কী গাছবাড়ির মতো মানিয়ে গুছিয়ে
বলতে পারে না,
কাল তোমায় সবুজ গাছের মাঝে দিগন্ত সমুদ্র নোনায়
পাহাড়িয়া মেঘ বিছিয়ে দেব,
একবার বলতে পারে না,
পাগলের মতো আমি যে শান্তি চাই,
যে শান্তির জন্য তোমার ঠোঁটে
উজাড় করে দিয়েছিলাম জীবনের সমস্ত হাসি কান্না
সেটুকু বোঝার মতো ক্ষমতা তোমার নেই!


নাকি গাছবাড়ি এড়িয়ে মুখোশ,
মুখোশে অন্ধকার নিয়ে
আমাকে যন্ত্রণা দেওয়ার জন্যই
তোমার জন্ম।


এই যে হাসপাতালে বসে আছি,
একবার তো আসতে পারতে,
আমি বসে আছি।
আমি অসুস্থ নই।


আমার ওষুধ তো গাছবাড়ি,
সমাজ জানে শুধুই সংসারি।
সংসারি এক ছবিতে
ভেসেছি নদীতে।


বারো ঘন্টা পরে
নেমে আসবে আলো।
এই অন্ধকার
কমে আসবে, কমে আসবে


বাসা বাঁধব গাছবাড়িতে
মানুষ নয়, শালিকের রূপকথায়।