যুদ্ধ আসলে বড্ড ধোয়াময় ক্যানভাস
মাতৃহারা শিশু, পিতৃহারা কন্যা মুখ
পানসে জীবনের ধুলোরক্ত, ধূসরতায়
সমস্ত বিজ্ঞাপনের মাঝে বিরাট সুখ
কখনও অনুভব করতে পারবে সময়!
আট শূন্য নিয়ে লাফালাফি হবে,
সীমান্তে বসে থাকা সৈনিক চোখ
জেগে থাকা বরফ ঠান্ডাতেও
আগামী শত্রুর খোঁজে... নিদ্রাহীন।


পুজোর মরশুমে আমরা মজাতে
ম্যাচ দেখার পর রাতে ঘুমাবো।
এই যুদ্ধ আর পুজো পাশাপাশি
অনেক কাল ধরেই ইতিহাসে
রচনা করেছে নতুন নতুন অধ্যায়।


স্কুলে পড়ার সময় এই যুদ্ধের কথা
পুজোর সময় প্রকাশিত ম্যাগে লিখেছি
বলে অনেকে তাচ্ছিল্য করেছিল।
প্রধান স্যার এসে বলেছিলেন-
ভালো লিখেছ, বন্ধুরা বেশ বিরক্ত।
আসলে মেধাবী চেতনারা এমনই
শুধু সমাজের একটি স্তরের সুবিধা
সাফল্য এই সব গিলে গিলে খায়।


যুদ্ধ আর ম্যাচ দেখা দুটোর ভিতর
আনন্দের কথাই বেছে নেয় বাঙালি।
আমি ভালো থাকলেই সব আচ্ছা
ইতিহাস তো যুদ্ধতেই লেখা,
তবু দিল ভারতের জন্য সাচ্চা।


গন্ডী আটা ভারত এভাবেই এগোচ্ছে,
দুর্গা পুজোয় উমার ঘরে আসা নয়
শিল্প, ব্যবসা, বিজ্ঞাপন তার পাখনায়
জুড়ে নিচ্ছে ড্রোনের মতো ডানা।
অসম্ভব সমস্ত অভাবহীন উড়ান
দেশাত্মবোধক চিন্তাকে ছাড়িয়ে
তৈরি করছে নতুন দিনের আলেয়া।


পুজো পুজো পুজো করে আমরা
উৎসবের থেকেও বেশি করে
গিলছি উত্তাপ, প্রকৃতিহীন গন্ধ
শিউলি ফুলহীন হেমন্ত।
কাশ ফুল এখনও রয়েছে
এদিক সেদিক ফটোশ্যুটের।


শুভ কী অশুভ মহালয়া সেই নিয়ে
বিতর্ক করতে করতেই মানব ধম্মকে
মেরে ফেলছি রোজ।
রোজ গিলে খাচ্ছি সিরিয়াল টিভি,
মানসিক বিকারগ্রস্থ ওয়েব সিরিজ।
হেয় করছি না শিল্পকে,
শিল্পের বাস্তব রূপ
ঢেকেছে কর্পোরেট দৃষ্টি।
মুনাফা লোভ আজ মা দুর্গাকে
দূষিত পৃথিবীতে অবদমিত করেছে
এসি ঘরের মিথস্ক্রিয়ার সংসারের মতোই।


মৃত্যু এমন করেই তো আসে,
দুর্গা সেখানে কী করতে পারে!
শিব কেবল বিষপান করেই নয়
এবার বরফ বাঁচানোর জন্য আসবে
বিষ্ণু, ব্রহ্মা পরামর্শ করবে যীশুর সাথে
মহম্মদকে ডাকা হবে সব সামলাতে।


বিশ্বাস করুন, কিছু করেই আর কিছু হবে না।
পৃথিবীর একপ্রান্ত জ্বলন্ত পিন্ড অন্যদিকে বরফ গোলার্ধ।


কোন ইতিহাস থাকতে পারে না তারপর,
গরীব বড়লোক কিচ্ছু নয়।
পাকিস্তান হিন্দুস্থান কিচ্ছুটি না।


আজ যে এই শিল্প,
সবটুকুই মহামায়ার মায়া মাত্র
এই যে পড়ছেন, শুনছেন
বলছেন, সবটুকুই মায়া।


একটা ফসিলসের উপর লেখা রয়েছে
গীতাঞ্জলি... বানানটা ঠিক করে পড়বেন একটু
না হলে সবটুকুই যে কালো চশমায় মমতাময়ী।