রান্নার সাথে সাথে কিভাবে এত কবিতা আসে। এই ভাবনা ভাবতে শুরু করলেই মুশকিল। কবিতা সমস্ত সময়ে রয়েছে। ঐ যে ফোড়নটা দিলাম, খুন্তির আওয়াজ হল, সেটাই তো তেলের গরম হওয়ার আওয়াজে কবিতার জন্ম দিতে পারে। কবিতা তো কবিতাই। এখানে অর্থের হিসেব নেই, জীবনের লড়াইগুলো কম। কবিতা তার নিজস্ব গতি নেয়। কবিতা আসে। কখনও কচ্ছপ আবার কখনও চিতার মতো বোল্ট। পদক জয়ের জন্য কবিতা আসে না। কবিতা আসে মনের তাগিদে। এই কবিতা অনেক কালের। অনেক জন্মের। জমা হওয়া কথারাই তো মুক্তি চায়। সেই মুক্তি দেয় কবিতা। কবিতার নিজেস্ব ঘড়ানা আছে। সেই ঘড়ানায় রান্নার দু একটা পদ আসতেই পারে। কবিতা রান্নার গন্ধটা ভালই। রান্নার গন্ধ যেমন বলে দেয় কেমন রান্না, বেশি লাল হলে ঝাল ঝাল...রিচ হয়েছে, তেল ভাসছে, তেমনি কবিতার অন্ত্যমিলও অনেক কিছু জানান দেয়। বুঝতে হবে কবিতাও। অনেক কবিতা যে রয়েছে। আবার ভাল মন্দের মাঝে মিশছে অনেক আশা-ভরসা-প্রত্যাশা।
ভজহরি মান্নার দোকানের কথা জানি, দক্ষিণ কলকাতায়, গানটাও জানি, কিন্তু প্রথমে তো তা কেবল কবিতাই ছিল। কবিতা আসে। ভালো হোক মন্দ হোক, রান্নার মধ্যেও তাই কবিতা লুকিয়ে। আবার কবিতার মধ্যে রান্না। কবিতাটি কিভাবে রান্না করছি, তার উপর নির্ভর করে পাঠক তাতে কি বুঝলেন।
কবিতার নিজেস্ব গঠন আছে, রান্নারও পদ্ধতি ও উপকরণ রয়েছে, তবে নতুন রান্নাও হয়। যেমন কবিতাতে নতুন ছন্দবোধও আসে। অনেক ঘুম কবিতা দেয়, আবার অনেক কবিতা দেয় ঘুম। যেমন রান্নায় নুন বেশি কম অনেক কিছু বুঝিয়ে দেয়। পারলে আপনারাও সেটা বুঝুন। কবিতা জীবন, জীবনে তাই রান্না থাকবে, তার সাথে কবিতাও থাকবে। ছুটির দিনের মাংস ভাত যেমন দরকার, মনের ক্ষিদের জন্য কবিতারও দরকার।
কবিতা পড়ুন ও পড়ান। বই কিনুন ও সাহিত্য প্রকাশনার শিল্পকে বাচান। রেস্তোরায় খাওয়ার চাইতে বইয়ের দাম কম। তাই রান্নার সাথে কবিতাকেও রাখুন। কবিতার স্বাদ চেখে দেখবেন নাকি!!