প্রদীপ হাতে।
মৃদু ঝড়ো হাওয়া বইছে।
জানলার ভিজে শিক চুঁয়ে, হাত বেয়ে; গড়িয়ে পরে-
ভিজে যাচ্ছে জামা।
ঝিরি ঝিরি বৃষ্টিতে ভিজছে কদম। অনাথ এতিম মেয়েটা আজ-ই প্রথম
রাত পাড় করছে তার বাড়ির বাইরে।
গতকাল পর্যন্ত তার-ও ছিলো একটা নির্দিষ্ট আশ্রম;
ফেরার তাড়া,
আজ তা নেই।
সারা দিন সারা রাত, তাই সে আজ
বাঁধন হারা। অবাধ,স্বাধীন, ঠিকানাহীন।
শূন্যে দুলছে তার; সেলাইবিহীন
হাতাটা, জামার ছেঁড়া।
বাড়িতে সে-ও আজ একা।
অনেক রাত-ই তাকে, এভাবেই একা রাখে!
তার জন্য বিশেষ মন, মনের যোগ, নেই কারও।
আলনায় অন্যদের কাপড়ের ভীড়ে সাজানো
তার-ও কয়েকটি কাপড়।
ব্যবহার করে সে-ও; এক-ই চিরুণী।
চুলে সিঁথি কাটে।
নিতান্তই অবহেলা ভরে; তার সামনে-ও আসে-
প্রতিদিনের ভাতের থালা।
তার পাতেও জোটে- সব্জীর ঝোল, শুটকি,
এক টুকরো মাছ- ভাতের এক পাশ।
কখনও জুটে থাকে- গিলা; কলিজা; মাথা; মুরগীর পা।
কেটে গেছে জীবনের অনেকটা বছর! এমন-ই উচ্ছিষ্ট খেয়ে।
দীর্ঘশ্বাস ফেলার-ও হয়নি অবসর।
আজ মনে হচ্ছে জানলার ওপাশের ওই মেয়েটি, যেন সে!
প্রদীপ কাঁপছে! নিভে যেতে-ও চাইছে
বাতাস, তুমি কেন দেবে বাতাস? আকাশ কেন দেবে নীম আলো,
যে দেখিয়েছে এই পৃথিবী, সে যখন-
রুদ্ধ করেছে আলো, করেছে অপাঙতেয়!