আর খেলো না!
খেলনা দেখিয়ে ভুলাতে চেয়োনা আর আমায়!
ঝুম-ঝুম! ঝুম-ঝুম!
ঝুমঝুমী খুব পছন্দ, তা ঠিক!
ভাবতে, খেলনাটাই বুঝি প্রিয় আমার,
তাই দেখাতেই কান্না ভুলে হাসি মুখ, মন স্থীর।
আসলে ওই ঝুমঝুমীটা না, প্রিয় ছিলে তুমি-ই, মা !
হাসিমুখে যে হাসি হেসে; কান্না ভুলাতে চাইতে,
প্লাষ্টিকের ওই খেলনা ঝুমঝুমি হাতে!
চাইতাম সেই হাসি মুখ মায়ের আদর।
ভেতরের ঝুমুরটা নড়ে উঠতেই, ডুকরে উঠতো মন অথৈ!
ঝুমুরটা শিখিয়ে দিয়ে বলতো, “বলো, মা- আমাকে কোলে নাও! আদর দাও!”
আমি ঝুমুরের শিখিয়ে দেয়া সেই বোল বলতে চাইতাম ঠিকই,
এত বেশী অভিমান হ’তো; যে সব কথা রয়ে যেত অব্যক্তই।
খুব জোড়ে শব্দ করে তাই কেঁদে উঠতাম।
সেই সাথে তুমি আরো জোরে জোরে বাজাতে থাকতে ঝুমুর-
ঝুম! ঝুম! ঝুম! ঝুম!
বাজতে থাকা ঝুমুরের শব্দ; আমার শিশু কান্নার সুর ছাপিয়ে জয়ী হয়ে যেত একসময়, ক্লান্ত কন্ঠস্বর থেমে গিয়ে নিরব হতাম-
গভীর ঘুমে।


শৈশবের সেই ঝুমঝুমিটার মত; আজও ঝুমঝুমি বাজে
আশে পাশে। আজও ভুলাতে চায় কৃত্রিম হৃদয়ের রং।
প্রেমহীন শৃংখল, ভালোবাসাহীন মন বারংবার বলে
- এই তো দেবো, এই যে আসছি!আর একটু পর...

বরফ শীতলতায় ঘুমায় অবজ্ঞার পাহাড়।
হাতের উষ্ণতা পায়- আবেগহীন নিরুত্তাপ।
কাঁদতে কাঁদতে শুকোয় যখন অশ্রু, ক্ষত-বিক্ষত যখন অস্তিত্ব;
ঝুমঝুমি বেজে উঠে...
শুরু হয় আবারও কাজ।


প্রিয় ঝুমঝুমি আমায় ডাকে, ঝুম! ঝুম! ঝুম! ঝুম!
- এসো, আমাদের এখন অনেক কাজ! সময় নেই আর!
ঝুমঝুমি ঝুম ঝুম বাজাতেই থাকে... স্বার্থের সুরে,
মিথ্যে ছন্দে নাচে কাব্য-কবিতা যুগল; হাতে রেখে হাত।
মুখে হাসি টেনে, মেকি উচ্ছলতা এনে ভাবি-
অনেক তো বাজলে ঝুমঝুমি, সত্যি আমি আর কিচ্ছু চাইনে!