কত কিছুই তো কাটাকাটি হয়!
বাড়ির বাগানের আগাছা,ওঠোনের ঘাস
রাস্তার দু'ধারের ঝাউ,থুজা গাছ।
নানান আকৃতিতে;চুলের বাহারী ছাট,
কেটে যাওয়াই তো কাচির কাজ।


মনলোভা সমুদ্র পাড়ে;বার্মিজ আচারে,
পলিথিনমোড়ানো ছোট-ছোট থলে কেটে,
টিফিনের ফাকে বান্ধবীদের স্কুলব্যাগ থেকে,
একে একে হুটোপুটি করে খাওয়া-
হাবিব মার্চেন্টের সেই মিষ্টি বড়ইয়ের স্বাদ!


দাদীর হাতে;কাচির যাদুতে কেটে
ঝালর হয়ে ওঠা-
রঙিন কাগজে উৎসবের সাজ!


পুরনো পত্রিকা ছেটে,পুতুলের ছাচে কাচি হেটে
লিপি খালার হাতে গড়া সেই সে পুতুল
আর তার ববিতা স্টাইলের চুল।
কপালের উপর পড়ে থাকা চুলের সেই
বিশেষ বিন্যাস,
মেয়েদের মাঝে হিরিক ফেলে দিতো,
চুল কেটে ববিতার মত
সাজবার আহ্লাদ।


কোন সে কাচিতে কেটে, নিখুঁত সরু চিকন চাঁদে
ঈদের খুশি আনেন পাক পরওয়ারদিগার?
সাত আসমানের আরশের উপর বসা,আলোর
চাইতেও অধিক আলো যার!


আমার সামনে পড়ে আছে গোলাপ ফুলের কুচি।
কে যেন তার রাণী হৃদয়টিকে-
ধারালো কাচিতে কেটে
কুটিকুটি করে ফেলে গেছে!


দৃশ্যের কুচিগুলো মিলিয়ে নিয়ে, আটকে দিয়ে
চমতকার গড়ে নেয়া যায়;বিশাল এক পাজল!
যেন পৃথিবীর কোন সমস্যাই আর সমস্যা নয়!
জীবনের সুন্দর দৃশ্যগুলোকেও যদি এভাবে
অসুন্দর থেকে ছেটে,জোড়া দেয়া যেতো!
যদি এভাবে জোড়াতালি দেয়া কাথায়;
শীত নিবারণের মতো;দুঃখ নিবারণ হ'তো!
কাচি দিয়ে কেটে কারো জীবনের বাড়তি সুখকে যদি;অন্যের সুখের ঘাটতিতে অমন-
জুড়ে দেয়া যেতো!
না জানি জীবন তখন;কত সুখের জীবনই-না হতো!


জীববিজ্ঞানের ব্যাবহারিক ক্লাশে, ব্যাং ব্যাবচ্ছেদে কাজে লাগে ব্যাবচ্ছেদের কাচি।ব্যাবচ্ছেদিত তেমন- গোটা নারী জীবন!নারীকে দ্বিখন্ডিত করে যে,
সে-ও এক পুরুষ কাচি।


মনটাকে টুকরো টুকরো করে দিতে তাই একটি
ধারালো কাচি খুজছি!
উদার নীতিতে আকাশে উড্ডিন;পাখির হৃদয় নিয়ে
আজীবন খাচ্ছি খাবি যন্ত্রণার অথই থেকে বাচাতে,
একটি কাচিই দিতে পারে আমাদের সহজ সমাধান।


দুঃখ নয়,যন্ত্রণা নয়,জীবনটাকে সাজানো বাগানের মতো;সুন্দর করে দিতে-
অসুন্দর দৃশ্যগুলিকে,মনের ব্যথাকে ছেটে দিতে
একটি বিশেষ কাচি'র আজ;সত্যিই প্রয়োজন!