রূপকথার মতো
------------------
প্রিয়া গিয়েছে রূপকথার এক দেশে,
পথ চেয়ে বসে একলা রাখাল ছেলে,
দিন গুনে গুনে
পত্র পেলো শেষে।
***********
" কেমন আছিস্ রাখাল ছেলে তুই?
আমি আছি ,
এখানে বেশ ভালো,
জানিস্?
আমি না এখন ,
সোনার খাটে শুই !
**
প্রথম যেদিন এলাম রাজার পুরী
প্রথম যেদিন রাজা আমায় ছুঁলো,
হঠা্ত করে জানিনা,
কিইই যে হলো।
কোলে তুলে নিয়ে পেরোলো শরীর- নদী
বলতো আমায় ,
পড়েই যেতাম যদি?
**
রাজা লোকটা, জানিস, বেশ ভালো,
সেদিন দুজন পক্ষীরাজে চড়ে..-
ওহ্ হো, পক্ষীরাজ তো দেখিসও নি বুঝি তুই----
ভীষন দামি, হাওয়ার মতো ওড়ে।
সেইটে চড়ে দুজনে,হাওয়ায় ভেসে
অনেক আদর পেরিয়ে গিয়ে শেষে,
এলাম তাশের দেশ।
এলোমেলো চুল দমকা দিচ্ছে হাওয়া
দুজন মিলে সময় পেরিয়ে যাওয়া।
লুকাবো না সোনা ,ভালই লাগলো বেশ।
**
এসব নিয়েই কেটে গেলো দিনগুলো
খোঁজ নেবো তোর, সময় -ই পাই নি মোটে,
জানিস, এখানে সব পেয়েছির দেশ,
সোনার গাছে হীরের ফুল ফোটে!
কালকে যাবো সাগরতীর বেয়ে,
গভীর করে আঁকবো রূপান্জন ।
রাজার জন্য সাজ্তে লাগে বেশ,
রাজা এখন বড় আপনার-জন।
স্বপ্নের মতো কাটছে আমার দিন,
রামধনু রঙ, সোহাগের কাঞ্চন।
আমার কথা ভুলে যা এবার ছেলে,
রাজারই জন্য ভেজা এ শরীর মন।
ভাবছিস তোকে ভুলেই গেছি বুঝি,
ভাবছিস তোকে ছেড়ে দিয়েছি একা,
কি করে তোকে ভুলবো আমি বল?
তুই ই যে আমায় শেখালি, স্বপ্ন দেখা।
এখনো যখন পক্ষীরাজে চড়ি
এখন 'ও' যখন ,
ঠোঁট রাখে ,-এই বুকে,
ভালো লাগে খুব,
তবু, মনে পড়ে তোর কথা।
ভুলিনি রে সোনা ,
ভুলতে পারি কি তোকে?
আচ্ছা তুই কি এখনো স্বপ্ন দেখিস?
উদাসী হাওয়ায় বাঁশী বাজানোর ফাঁকে?
রূপকথা কি সত্যি হয় রে বোকা,
রাজকন্যেরা রাজার সাথেই থাকে।
মনে আছে তোর আদরের দিনগুলো?
আমাকে তুই ডাকতিস্ মণি বলে?
মণির কথা এবার একটু শোন
এবার আমায় যা দেখি তুই ভুলে।
কেন যে এমন পাগল-পারা তুই
দ্যাখ্ না চেয়ে, আমিও তো আছি ভালো,
আচ্ছা এবার আসি রে তবে,ছেলে।
বুকে আসবার, রাজার সময় হোলো।"
***************
চিঠি শেষ করে হাসলো রাখাল ছেলে।
চিঠির সাথেই মন দিয়েছিলো পাড়ি,
পত্র শেষে কাটলো স্বপন- যাপন
বেলা পড়ে এলো, ফিরে যেতে হবে বাড়ী।
থাকবো না ভালো কন্যে আমার
আসবে না মুখে হাসি,
অবিরত বুকে রক্তক্ষরণ
ভালোবাসি।
ভালোবাসি।
***************
রূপকথা শেষ।
কন্যে আছে , সেথায়,
যেথায়,
মানায় তাকে,
ঝুলি ঠাকুমার, স্বপ্ন দেখিয়ে যায়
রোজকার এই দিনযাপনের ফাঁকে।