সেই দুর্গম পাহাড় । থোকা-থোকা ক্ষত নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা । নীরব রাত্রি । পিনকি জল গড়িয়ে পড়া । সে গুমোট শব্দ ! নিস্তব্ধ প্রাচীন । নীরব সুর । নিত্য পাপকে কুচিকুচি করে কেটে নিশাচর নয়নে পুরে রাখার খোঁজ যেন সে জানে ! গভীর কীর্তন সয় না- সে যদি জানতো, উড়ে যাওয়া বিহঙ্গের ব্যবচ্ছেদে আকাশ পেত স্বাধীনতা । আকাশ, তার নাকি অনেক ঋণ। এই যেমন ধূম, জল, ডানা, লালিমা, শীতল, প্রথম প্রহর, শেষ ডুব, বিরহী বেলা , ধুলোর বাকসো প্রমুখ করেছে নাকি তাকে দায়বদ্ধ । এ আর এমন কী মোর হৃদয়ের আকাশে । সেখানে তো নেই এসবের ভার । যা সকল গ্রাস তার নীলে । কেড়ে নিয়ে ধূমায়িত স্বাদ সকল সাজে সে ছদ্মবেশ ।


এই রোনাধোনা, ছল-ছুতা সয় না তো । শুধু দুর্গম গন্ধের পেয়ালা হাতে কে যেন ডেকে যায়, ওই তো সেই দুর্গম। ধূমের সাথে তার বেশ ভাব, চুমুয় ঝরে ব্যথা, কেড়ে নেয়, ঝরিয়ে দেয়, খসিয়ে দেয় । সজাগ পঞ্চ সেই সুর খোঁজে নেশা ধরায় । খসে খসে পড়ে হয়েছে নাকি তার এত ক্ষত, বলেছে নিজে তার সাক্ষি সেই দুর্গম ।সবে বলে সে ঝরায়ে তার হয়েছে সুখপ্রহর । কিন্তু সে তো বলেনি এ সকলে দুঃখ ছিল ! এ ছিল তার অসুখী অহংকার- গ্রহ গ্রহান্তরেও তার দাঁড়িয়ে থাকার সুপ্ত প্রদীপ । সকল অপরাধ টুপটুপ বেয়ে পড়ার, দোষারোপ করছে সে । কেন শৃঙ্গ থেকে বুক বিদ্ধ করে নিম্নে তার বেয়ে পড়তে হবে ? হয়তো না হয় করলোই গহীনের অবুঝ আমন্ত্রণে প্রথম মুলাকাত, হয়তো একটু মাখামাখি । তাই বলে বেয়ে পড়তে হবে ! খসে দিতে হবে সর্বাঙ্গে, নিজস্বে কেড়ে নেবে !


তুলো সিক্ত নরম ওম কেড়েছে সকল ঘুম । নাহ, সবই হাতড়ে বেড়ানো-সেখানে সকল অদৃশ্য । কে বলেছে এসব মাধুর্যে মোড়ানো মিথ্যে ? ও সেই দুর্গম পাহাড় ? সে গহীন ? তবে সত্য । কত ঝরনা পেয়েছে মৃত্তিকার মায়া তা কী কেউ জানে ? ওহ, সে ডেকেছে ! এই ডাক কী উপেক্ষা করা যায় ! সকল ঘুড়ি, রঙ, ঠিকানা তাই ছেড়েছে সেই দুর্গমের মায়ায় । সে বলেছে আমায় করবে হৃদয়ে হরণ । এই ভালবাসা আমি চাই । এই প্রেম আমার । আমি সেখানে কাঁদবো, ধূম সাজবো, খসিয়ে দেবো শৃঙ্গ থেকে বুক নিম্নে আপন স্বাদে !