ওরা ভাইয়ের রক্ত চেনে না।
তাই তো পথে ঘাটে লেগে থাকে রক্তের দাগ।
ছোরা ,গুলি  অনায়াসে প্রবেশ করে শরীরের ভেতর।
রক্তে রাঙা হয়ে ওঠে,মানবতা দিয়ে একটু একটু করে
গড়ে তোলা, এই মনুষ্য শহর।
চারিদিকে আকাশ, বাতাস জুড়ে শুধু লাশের তেজস্বী গন্ধ।
মৃতদেহগুলো পড়ে আছে রাস্তায়, ঝোপে-ঝাড়ে, পথে প্রান্তরে। আচ্ছা, ঐ মৃত দেহগুলোর কাছে শুনে দেখ তো ওদের ধর্ম কি?
ওরা হিন্দু নাকি মুসলমান?


হয়ত ওরা জানে না সবার রক্ত লাল।
ওরা জানে না, মানুষ কখনও ধর্ম বোঝে না।
ওরা জানে না রক্তের মূল্য কত।
ওরা ওদের জাত ভাইয়ের রক্ত চেনে না।
ওরা জানে না ধর্ম মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে না,
মানুষ ধর্মকে বাঁচিয়ে রাখে।
হয়ত ওরা জানে না সবার আগে মনুষ্যত্ব
তারপর ধর্ম,সাম্প্রদায়িকতা।
হয়ত ওরা কিছুই জানে না।
জানে শুধু হিংসা, হানাহানি, দাঙ্গা।
ওরা শুধু এটুকুই জানে, কীভাবে রক্ত দিয়ে সাজাতে হয়
মানবতাহীন মিথ্যা ধর্মের ইতিহাস।


চারিদিকে শুধু শোনা যাচ্ছে পিতৃ মাতৃ হারা শিশুর কান্না,
সন্তান হারা মায়ের বুক ফাটা কান্না বা
স্বামীহারা বিধবা স্ত্রী'র নীরব কান্না।
আচ্ছা কান্নার বিকট আওয়াজে কি বোঝা যাচ্ছে
ওদের ধর্মের প্রতিক  ?
তুমি কি এখনও বুঝতে পারছো, ওরা হিন্দু নাকি মুসলমান  ?


শিশুর গোঙরানো শব্দ, মায়ের বুক ফাটা কান্না
ডাক দিচ্ছে হঠাৎ ঈশান কালো আকাশে বজ্রবিদ্যুৎ - এর ।
ওই শব্দ একদিন চমকে দেবে সমগ্র বিশ্ববাসীকে ।
তারা জানিয়ে দেবে ধর্মের রং বর্ণবিহীন।


শুনেছি তুমি ঈশ্বর বিশ্বাস করো কিন্তু তুমি মানবতার কাছে এত অপরিচিত কেন?
শুনেছি তুমি আল্লাহ'কে বিশ্বাস করো তাহলে তুমি অন্ধবিশ্বাসে এত বিশ্বাসী কেন  ?


শুনেছি সেখানেই ধর্ম বিরাজমান যেখানে হানাহানি নেই,
সাম্প্রদায়িকতা নেই, বিদ্বেষ নেই, নেই কোনো দাঙ্গা।
যেখানে মানুষে মানুষে মিলেমিশে থাকে,
গড়ে তোলে মানবতা, ভাতৃত্ববোধ।
যেখানে ধর্মগ্রন্থ রচনা হয় একে অপরের জন্য
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে।
হ্যাঁ সেখানেই ধর্ম গড়ে ওঠে যেখানে মনুষ্যত্ব মূল্যহীন হয় না।


যদি আজও তোমার মনে একটুও নৈতিকবোধ থাকে
তাহলে জোর কন্ঠে বলো ,  
"যতক্ষণ মুখের ভাষা আছে, যতক্ষণ শ্বাস আছে
ততক্ষণ আমাদের শুধু একটাই পরিচয় হোক,
মানুষ, মানুষ আর মানুষ।"