সেদিন,
একান্ত নিভৃতে, অন্ধকারাচ্ছন্ন, ভাঙা কুটিরে
যখন হেমন্তের শেষ রাত্রিতে, বাবু-
জাগিয়া উঠিয়াছিল আরও একবার
অর্ধনগ্ন, কামহতে সদ্য মুক্তি প্রাপ্ত হয়ে,
তখন নিজেকে খুঁজেপেয়েছিলে
পুষ্প নয় কণ্টক রচিত শয্যায়
যেমন তৃণশয্যা সবুজ হলেও তা
তারুণ্য প্রদান করেনা, দেয় যন্ত্রনা, যুবকেরে।
অন্য চন্দ্রালোকিত রাতের ন্যয় আজও
বাবু জড়াইয়া ধরিয়াছিল বাহুবন্ধে
একাবিংশতীর বক্ষবন্ধনী,কখনো বা দুটি হাত।
কখনো শুনিয়াছিল তার হৃদস্পন্দন
কখনো বা বলিয়াছিল 'ভালবাসি' ।
যেন কণ্টক শয্যা পুষ্পশষ্যা হতে-
অধিক আনন্দের হিল্লোল দিতেছে তাহারে।
একজোড়া নিষ্পলক মলিন চোখের-
প্রদীপ হতে চেয়ে বলেছিল 'ভালবাসি' ।
হায় পৃথিবী! এটা বাবুর কোন বোধ-
বিবেক, না কি ঘোর মদের নেশা ?
দিবালোকে যাহারে খোঁজেনা কেহ
আজ পূর্ণিমায় তাহার কণ্টক শয্যা
পুষ্পশয্যার রূপ কি লইয়াছে...?
যাহার উদরের ভরণ-পোষণ লইয়াছে
তাহারই শ্রোনিদেশ, তাহার কিনা-
আমন্ত্রন জানাইতেছে বাবু 'ভালবাসি' বলে।
কিন্তু প্রভাতে কি কেহ মনে রাখে-
গতরাতে যুবতী চন্দ্র ছিল আকাশে।


নির্বিকার চোখদুটি বন্ধ হয়েছিল একবার
ঠুন ঠুন করে দুটো কাঁচের চুড়ির শব্দ
উলঙ্গ বক্ষ হতে মুখ সরিয়দেবে-
না তা আঁকড়ে ধরবে একজোড়া হাত।
বলিয়াছিল,'কাল প্রভাতের পর হতে
আর আসিবে না এই কুটিরে-
যার শয্যা রচিত হয় একমুঠো
কড়ি দিয়ে, তাহাতে পুষ্প শোভা
ফ্যাকাশে হয়, হয়ে যায় গন্ধহীন'।
বাবু, 'তোমার আমার শয্যা মধুর
হবেনা কখনো মলিন ভালোবাসায়।
আমার শয্যা পুষ্পশোভিত হবে-
যখন কিনিবেনা আমারে কেহ কড়ি দিয়ে।
ওহে বাবু, নব তরুণী তোমার পানে
চেয়ে আছে, শোন তাহার হৃদস্পন্দন।'


কহে,' বাবু, যদি সমাজটা পাল্টে যায়
বেশ্যা যদি আমায় নয়, তোমাকে কয়
আর আমি যদি সেদিন কর্তৃ হই,
মিটাইয়া কড়ি, তোমারে যদি আমি
ভালবাসি, ভালবাসি বার বার কই
গ্রহন করিবে কি আমারে, নাকি
ফিরাইয়া দিবে ? ভাবিও প্রভাতে।
সেদিন হইবে তুমি বেশ্যা-
হায় তোমার অতীত ........।
কড়িহীন কর্তৃরে খুঁজিবে হয়তো তুমি
তোমার স্বপ্ন বোনার সীমানায়, যে
তোমার অতীতকে কখনো দেখিনাই।
ভুলে যেয়ে আজরাত আমারে বাঁচিতে
দিয়ো যুবক, মিনতি তোমার পায়ে।
আমি আজ নীচ, তবু স্বপ্ন বোনা যুবতী
স্বপ্ন বুনি তাহারই খোঁজে বার বার
যে আমারে খোঁজে কড়ি দিয়ে নয়
আমার অতীত দিয়ে নয়।
ভালোবাসি আমি তাহাকেই বলিবার প্রতীক্ষায়'।