(ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সিংগিয়া গ্রামের রিকশাচালক সন্তোষ বর্মণ (২৯)। সাত-আট বছর বয়সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হলে ডান হাতের কনুইয়ের ওপর পর্যন্ত কেটে ফেলতে হয়। এর পর থেকেই ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন। এক দোকানির অপমান সইতে না পেরে ভিক্ষা ছেড়ে এক হাতেই রিকশা চালানো শুরু করেন। এভাবেই কেটে গেছে ১২টি বছর। এক হাতে রিকশা চালাতে গিয়ে হঠাৎ সামনে যানবাহন চলে এলে অনেক সময় নাকাল হতে হয় তাঁকে। )



পৃথিবীর মায়ার টানে ছুটে আসা নক্ষত্রের দল,
পদ্মাসন গাড়ে জীবনকে ভালোবেসে,
ধ্যান-জ্ঞান-সাধনা ঈশ্বরের বেদীতলে যজ্ঞনিবেদন
তার তুষ্টে ছিলো আবিষ্ট সাধক।


একদিন নক্ষত্র খসে পড়ে দুর পাহাড়ে
পাহাড়ের নিষ্ঠুর আঘাতে বিক্ষত একটি হাত,
ধ্বসে যায় কনুইয়ের শেষ সীমানা।


এভাবেই শুরু কষ্ট্য় নামের মহাকাব্য;
অনিদ্রা-অনাহার, মানবতার বক্ত্র চাহনি,
তাচ্ছিল্য-অপমানে কেটে যায় বারটি বছর!
ভিক্ষে নামের অভিষাপ তাকে
তাড়িয়ে বেড়ায় গ্রহানোপুঞ্জে।


শুরু হয় বেঁচে থাকার যুদ্ধের দামামা;
বাঁ হাত ও দুটি পায়ের নির্ভরতায় ছুটে চলে
তিন চাকার কষ্টার্জিত  জীবন!
মাঝে মাঝে কেউ হয় করুণার সওয়ারী,
কেউ বা ভালোবেসে একটি আধুলী,
কেউ বা ভয়ে আতকে উঠে!


তার, পীচ ঢালা পথের নিষ্প্রান যানগুলো তাকে চেনে,
ভালোবেসে পথ দেখায় আপন ঠিকানা,
সন্ধ্যায় তিনটি মুখ, সক মুঠো ভাত,
সুখের হাসি, প্রিয়তমার করুণ মুখ
বুকের পাশে চিনচিনে ব্যাথা
নক্ষত্র হারিয়ে যায় অন্য ভুবনে।


তিন চাকা, একটি  হাতের যুদ্ধ চলে
বেঁচে থাকার ময়দানে।


০৩/১১/২০১৪