পাখিরা একটা সময় আলয় ছেড়ে বেড়িয়ে যায়;
সময়ের বাঁধনে গড়া পৃথিবীর নিয়মের ঘড়িটা
মাঝে মাঝে উল্টে যায়, থমকে যায়
দুঃখে গড়া কোন এক ক্যান্ভাসের সামনে!


তখনো আঁধারের খেলাটি থামেনি,
পিতৃহারা এক কোমল পথকলি
ঘর ছাড়ে অভুক্ত কিছু প্রানকে ঘুমন্ত রেখে।
মেঠো পথের কাঁদা-জল পেরিয়ে
পৌঁছে যায় মানুষের গড়া নিষ্ঠুর এক ভুবনে!
ছারিদিকে ছড়ানো-ছিটানো ইটের বাগান
কোথাও কোথাও ছোপ ছোপ রকের দাগ,
এঁটো খাবার, উপরে চৈত্রের খোলা আকাশ,
চেয়ারে বসা রক্ত পিপাসু দুটি চোখ।


একটা সময় কোমল হাতে উঠে তপ্ত শিসা;
হাড্ডিসার দেহে, শেষ শক্তিঅটুকু প্রয়োগে
এক একটি ইট রূপ নেয় ভিন্ন মাত্রায়,
কোমল হাতে ফোসকা, রক্তেরা করে খেলা
অভুক্ত পেটে ক্ষুধার দাবানল জ্বলে
চোখে সামনে অন্ধকার, ভেসে আসা মায়ের মুখ
স্কুলের পথে তিন বোন
ইট ভাঙ্গার গতি তীব্র থেকে তীব্র করে তুলে।


তার পরও ক্ষুধা মেটে না রক্ত পিপাসূর!
ক্ষিপ্ত হয়ে খেঁকিয়ে উঠে
কখনো লাঠির আঘাত, থাপ্পড়, লাথি!
প্রকৃতি যেন আরও নিষ্ঠুর
চৈত্রের দুপুরে্র তেজ চাবুকের মতো
কষাঘাতে অঙ্গার করে কোমল পিঠ!
কে দেবে সান্তনা ক্ষণজন্মা সময়কে?


সময়ের ঘড়িতে দিনের আলোর যবণিকাপাত হলেও
কাজ পড়ে থাকে অনিয়মের ঘড়িতে!
সন্ধ্যা নামে, গির্জার মিনারে বাজে সান্ধ্যঘন্টা
মসজিতে আযানের সুমধুর ধ্বনি
আর শত বছরের মন্দিরে শাখা-উলুধ্বনি,
কোমল প্রানে জাগায় বেঁচে থাকার নব প্রেরণা।


রক্ত পিপাসুর হাতে একশত টাকা,
কোমল হাতে রক্তের সাথে লেপ্টে থাকে।
ঘরে ফেরার পথে হরিদাস কাকার দোকান,
এক কেজি চাল, কিছু পঁচা আলু!
উঠানে অভুক্ত মা, ভিতরে দুঃখের কাহন,
চারিদিকে ঝিঁ ঝিঁ পোকাদের খেলা
কোমল হাতের ভিতরে দুঃস্বপ্নের খেলা।


এভাবে নিত্য চলে অদ্ভুত পৃথিবীর খেলা!


০৪/০১/২০১৪