মহাকাল ডাক দিয়েছিল --
রায়মাতাং নদী পাহাড় , হেঁটে যাই টানে টানে
দুরারোহ , অরণ্য-তৃষ্ণায় অমসৃণ বাধা, পায়ে পায়ে....
নদীবুকে শাদা বালিচর ইরানের গালিচা বিছিয়ে
দুই পার উপলে উপলে, পার হয় দেহমন
হাত ধরে ভূটানের শিব অনুচর ড্রুকপা ছেলে
দূরে দুর্লঙ্ঘ্য পাহাড় ভূমি পার হয়ে রাত্রিদিনে
ভাতের সন্ধানে নেমে আসে
গুবাকের ভারী থলি নুব্জ পিঠে
সমতল, হাতিবিচরণ পথ ঘন জঙ্গল ঢাকে
রাত শেষ হয় সূর্যরোদের আগে ;
গৌরাঙ্গ বালক সহজ সরল বারো তেরো
উন্নত নাক সমর্থশক্তিসাহসের দুই পা
চরণদার, আমাকে ব্ন্ধুর পথ দেখায়
পাথরলাঞ্ছিত আমার ছেঁড়া জুতোজোড়া
হাসিমুখে চেয়ে নিয়ে নিজ হাতে বয়
হাতিদাঁতচষা ছাল ওঠা কালীপাহাড় শীর্ষ
পার করে দেয় মহাকাল তলে, বিস্ময় !
নীল শাদা হাসিমুখ মাথায় মোক্ষপথে
আকাশ সেজেছিল মনোহরা রূপ-আরতি
দৃষ্টিসুখের ফুল দিয়েছিল পূজায় গিরিখাতের গা
মহাকালিগীত ধনেশ পাখিতে গেয়ে ওঠে মুক্তির স্বরে ....
সামনে দাঁড়িয়ে মহাকাল শেষ পাহাড়চূড়া
বনস্পতিছাল অঙ্গে জড়ানো, ত্রিশূলহাত বাড়িয়ে
কালের দিকে চেয়ে, মহাসাগরের স্থির প্রশান্ত
বরাভয়, পৃথিবীর প্রাণরস নির্গত পদমূলে
সবুজ শ্যওলা লেগেছে, পাথরের দাঁত গড়িয়ে
ছুটেছে মহাকালী শ্বেতা, পীযূষ অনন্ত ধারা
সমতল পথ চলে মহামানবের সাগর সঙ্গমে....
নিরাবৃত নির্ভার আকাশের নিচে
চিৎ হ'য়ে শুয়ে শীত শীত স্রোতা
সুস্থ শ্বাসবায়ু মুক্ত, বৃক্ষ গুল্মলতা
দুরন্ত রদ গজের সংসার, ড্রুকপা মরমী ছেলে --
সব কিছু নিয়ে আমার মহাকাল
মুক্তির পথ দেখায় ~~~~্