ও মা মহামায়া-
করুণ স্বরে ডাকছি তোরে- দিসনা মা ক্যান দেখা।
আমি পাগল তোর দীক্ষায়- একটু দেখা দে
ফলের আশায় আসিনি মা- তোর চরণ তলে।


অর্থ-কড়ি চাইনা আমি- দেনা আমায় দেখা
চরণ তলে ঠাঁই দিয়ে মা- আঁচল তলে রাখনা।
পেয়েছি অনেক কিছুই মাগো- তোমার দয়াতে
মোর চক্ষু দু’টি গেল চলি- তোর চরণে কাঁদিতে।


তোর দয়াতে আজ পেয়েছি অন্ন-বস্ত্র ঘর
দিলি তুই সকল কিছুই- পাইনা দেখা, ক্যান তোর।
চাইনা মাগো তোর কাছে- একটি ভাল বর
যেমন দিছিস তেমনি ভাল- বাবার দেওয়া ঘর।


এতো ডাকি তবু কেন- দিসনা দেখা মোরে
কাঁদতে কাঁদতে দেব দেহ- আজ, তোর চরণে।
করুণাময়ী মা তুমি- শরীর রেখ ভালো
সুস্থ্য থেকে মোদের তরে- আশির্বাদ আজ ঢালো।
দশটি হাত তুলে মা তুই- দিলি অনেক মোরে
মর্তলোকে আসলি মা তুই- ঢাক গুড় গুড় শুনে।
এমনিতেতো পড়েনা মনে- একটু মোদের কথা
বছর শেষে শরৎ কালে- নিমন্ত্রণে আসা।


ঢাকের তালে ঢোলের তালে- ধুনচি নাচন দিয়ে
মহামায়া রূপে মা তুই- আসবি আমার ঘরে।
আদর করে সোহাগ করে- করবো পুজো তোরে
মর্তলোকের বিঘ্ন কাটিয়ে- যাবি মা তুই চলে।


বছর শেষে পাঁচটি দিন আসিস বাপের বাড়ী
থাকনা মা তুই মোদের সাথে- আরও ক’টা দিন।
শ্বশুড়বাড়ী স্বামীর সাথে- করবি দেখা পরে
বাপের কোলে মাথা রেখে- মা তুই, শুসনি কতদিন?


সারাটাদিন তোকে মোরা রাখবো- চোখে চোখে
খাতির যত্নে কমতি থাকবেনা- থাকনা মোদের সাথে।
নুন জুটলে পান্তা খাবি- ছানা জুটলে বড়া
মিষ্টি মিঠাই কেনার মতো- নেইকো কাছে কড়া।
তোরে পছন্দের সকল ফুলে- করবো পুজাটি
যে ফুলটি ভালো লাগে- নিবি একটু যাচি।


সারাটাদিন ভক্ত আমি- ভক্তি ভরে করবো প্রণাম
তোর জয়-জয়াকারে- একত্রে হবো মত্ত সকল।
রক্ষা করবি তুই মোদের- স্বর্গলোকে থেকে
প্রতিদিন উপোশ করে- পুজো দেব তোকে।
চরণামৃত গ্রহন করে- উপোশ ভাঙবো
প্রসাদ গ্রহণ করেই আমি- মস্তক নোয়াবো।


চারটি দিন যত্ন করে- পুজো করলাম তোরে
পাঁচের দিনে সকাল হতেই- মা তুই, গেলি ক্যানো চলে।
তোর দেহের মূতি গড়ে- পুঁজিলাম ক’দিন তোকে
যাসনা মা তুই, আমায় ছাড়ি- আয়না ঘরে ফিরে।


সাড়াটাদিন সিঁদুর খেলে- কাঁদছি এখন বসে
কেনোরে মা, ছেড়ে গেলি- কিছু কমতি রেখেছি?
ভুলগুলি শুধরে দিতে- থাকনা আমার কাছে
ভুলে ভুলে জীবন গেল- পাইছিনা আজ তোকে।


অর্জন করেছি তোর থেকে- পুজোর ক’টা দিন
শুদ্ধ মন্ত্রে আর চন্ডি পাঠে- হয়েছে আকাশ ভারী।
ঢাকের তালে ঢোলের তালে- ধুনচি নাচন নেচে
তোকে মাগো রেখেছি আজ- মোর হৃদয় জুড়ে।


মা দুর্গার জয় হোক- জয়ধ্বনি দিয়ে
নেচে নেচে তোকে মাগো- রেখেছি কাঁধে তুলে।
বলো দুর্গা মা’য় কি- জয় জয় বলে
সন্ধ্যা হলে ঘোড়া করে- যাবো তোর দেশে।


দিয়েছো মা অনেক কিছুই- আরতো কিছুই চাইনা
দাওনা দেখা তুমি মোরে-
একটু কৃপা কি- হয়না?


কর্ম করি ফলের আশায়- সুখের সংসার গড়তে
স্মরণ করি সকাল-সন্ধ্যা তোমার চরণে।
দাওনা মাগো একটু দেখা- অধম সন্তান তরে
বর নয় ইচ্ছা দেখার- মোদের ঘরে তোরে।


তুষ্ট তুই হনা মা- একটু মোদের লাগি
মর্তলোকে আসিয়া ক্যান- তুই চলে গেলি।


সকল সময় পড়ে মনে- মুখটি ভাসে চোখে
দুঃখের দিনে, বেশি করে- ডাকি পরাণ ভরে।


পাপকি মা যায়নি ধুয়ে- তোমার দেখার লাগি
ডাকছি এতো আসিস না ক্যান- মরবো কি! আজ আমি?
দে..না দেখা একটু মোরে- চরণ ধরে থাকি।


একটিই শুধু চাওয়ার আছে- একটিই আছে পাওয়ার
ফলের আশা করছি না মা- আছে, শুধু তোকে দেখার।


(সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭)
বিকাল- ০৪:০৭ ঘটিকা


দৃষ্টি আকর্ষণ- কড়া > কড়ি


বিঃদ্রঃ লেখনিটি শ্রুতিমধুর নয় তবুও আপনাদের পাঠের জন্যে পোষ্ট মাত্র। ভুলত্রুটি মার্জনীয়।