পেটে গামছা বেধে ইট ভাঙছিল
যে অনাহারী শিশু শ্রমিক
আজ দুপুরে হাতুড়ির কষাঘাতে
তিনটে আঙুল থেঁতলে গেল তার
সে জানেনি আজ তার কপালে পারিশ্রমিক নেই।


মুখে বালিশ চেপে কাঁদছে যে যুবক
বেকারত্বের গ্লানিকে চোখের জলে মুছবে বলে
সে জানেনা আর কত জলে বেকারত্ব মুছবে।


পেটের দায়ে কাগজ টোকায়
ছোট ছেলে যার মার
গতবারের হরতালে ভারাটে পিকেটার হয়ে
প্রান গিয়েছিল তার।
উনুনে শূন্যহাড়িতে চোখের জল জ্বালানী করে
পানি সিদ্ধ করে যে জনম দু:খী মা
সে হয়তো জানে না একালের শাষকেরা উমর হয়না।


বিবাহযোগ্য আইবুড়ো মেয়ে
ভাতনষ্ট করে যায় যে ঘরে
সে ঘরের কর্তা কর্তাবাবু নয়,
হাড়ভাঙা কিষাণ
সে জানেনা সরস্বতী বর দেবে কবে
কবে রাঙাবে জামাই আইবুড়ির সিঁথি।


ধর্ষিত হল যে কিশোরী
গঞ্জের ক্লাব ঘরে লাগাতার
মঙ্গলবার শালিসে একঘরে করা হয়েছে তার পরিবারকে,
সে জানতো না মানিক বাবু লিখেছেন উদ্ধৃতি চিহ্নে
ঈশ্বর থাকেন ঐ ভদ্রপল্লীতে।


মিথ্যা প্রেমের ফুলছড়ি বুঝে
লাফাঙ্গাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল যে চন্দ্রমুখী
তার চন্দ্রমুখ এখন এসিডে জ্বলেপুড়ে ঝলসানো রুটি
সে জানেনা তার রুটিতে কেউ ছোঁবেনা মুখ, জিহ্বা,ঠোট।


ক্ষোভে,দু:খে লজ্জা আর অভিমানে
অর্জুনগাছের মগডালে দড়ি বেধে
আত্মহত্যা করল যে নিরুপায়
সে জানেনা ভগবান অর্জুন
তার জন্য সাজিয়েছে নরক।


মালিকের আছে বহু চর্মসার হাড়
বেড়ে যাচ্ছে তাই পাচাটা কুকুরের হার।
গর্তে শিয়ালছানা লেজকাটা তার বাপ
ক্ষেতের মালিক তারে করেনিকো মাফ।
বাছুর মুখ দিল বাটে খাবে বলে দুধ
টেনে নিয়ে যায় বাছুর গোয়ালার পুত।
ক্লান্ত -শ্রান্ত প্রানী বিরস মুখখানি।
কিছু বাদে নেবে শকুন সাধের জীবন টানি।
জলাশয় শুখায় যায় চিন্তাকুলিত ব্যাঙ
রক্তচোষা টেনে ধরে মানবতার ঠ্যাঙ।
একি তবে সংঘাতের বাণী।
মানব-কুকুরে তাই আজ হানাহানি।