***
আমরা মাটির জাত,
দেহজাত শব্দগুলো
মৃত্তিকার অভ্যন্তরে লুকিয়ে রয়েছে।


আমরা মাটির প্রাণ-
ভিটে, মাটি, ফসলী জমি
সব এই মাটির দান।
পরিবর্তনের দাবি তুললে
তাই আমাদের নাড়িতে টান লাগে।


শত শতাব্দীতে বহুদা মিশ্রন
ঘটে গ্যাছে রক্তে,-
তাই আর জাত বিচারে যাই না।
মাটিকে ভালোবেসে
এখানেই বসতি গড়ি!


ভাষা মাটির প্রথা,
অনাদিকাল থেকে-
আমরা যা বলতে চেয়েছি
তা ভাষা হয়ে রূপ নিয়েছে।
আমরা আর কিছু নই,
আমরা চাষার জাত-
দু'বেলা পেটে ভাত পড়লেই
আমরা সুখে থাকি!


আমাদের প্রেমগাঁথা মাটির সাথে;
অস্ট্রিক শিকারী থেকে
আর্যপূর্ব দ্রাবিড়ের দল,
এই মাটি ভালোবেসে-
মিশে গ্যাছে মাটির ভেতরে।


পদ্মার প্রবাহে ভেসে বেড়াই-
এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে;
তবুও আমরা আলাদা হই না!
ভাষার মহিমায় গাত্রবর্ণ ভুলে
নতুনজাত হয়ে উঠি।
এই বদ্বীপের মোহনার মাটি,
আর মুখের সুখকর ভাষাকে ভালোবেসে
আমরা বাঙালি হয়ে উঠি।


আমাদের মধ্যে শতেক বিভাজন
মিল নেই বললেই চলে,
একে অপরের জান নিতে প্রস্তুত!
তবুও আমরা দিনশেষে
নিবীড় ছায়ায় বসে একত্র হই;
তখন আমাদের মুখের ভাষা
আমাদের সাবলীল জাত বানিয়ে দেয়।


কে আদিবাসী, কে কোন বংশের,
কে আর্য, কে অনার্য,
এসবের ধার ধারি না।
বাঙলাকে ভালোবেসে
বাঙলাতে কথা বলে যাই!


বাঙলার শরীরে ভাসে
বদ্বীপের তাজা মাটির ঘ্রাণ;
আদি থেকেই ধান, পান
ও গোকুলের বাঙালিত্ব ছিলো।
জনাকীর্ণ স্বদেশবাসী,
ভাষা ও মাটির প্রণয়ে-
একত্রে মিলে মিশে থাকে।
***