পূজা এসেছে-
হওয়ায় কাশফুলের দোল লেগেছে।
শিউলি ফুলের গন্ধে বাতাস ভরেছে-
প্রকৃতি তার চিরাচরিত নিয়মে সেজেছে।


তবু মন যেন বেদনায় ভরেছে-
কত লোক ঠাকুর দেখতে ঘুরছে।
আর মনে পড়ছে-
সেই লোকটাকে
যে ছোট্ট বেলায় হাত ধরে
নিয়ে যেত ঠাকুর দেখাতে-
ভীড়ে ছোট্ট 'সু' হারিয়ে না যায় যাতে-
হাতটা চেপে ধরতো হাতে।
কাঁধে চাপতো, যাতে-
ক্ষতি না হয় আঘাতে।


আজ তাকে আমি
কত চেষ্টা করছি-
তাকে আমি হারায়ে খুঁজছি
পূজার জনসমুদ্রে-
যদি তাকে একবার দেখতে পাই
যদি তার পদযুগল একবার স্পর্শ করতে পাই।


বাগবাজার থেকে একডালিয়া
জনসমুদ্রে ঘুরি খুঁজিয়া খুঁজিয়া।
চেতলা থেকে ত্রিধারা
বহে শুধু অশ্রুধারা।


হাতে খড়ি থেকে মাস্টার ডিগ্রী,
পাঠশালা হতে ইউনিভার্সিটি-
ইন্টারভিউ থেকে পারসোনালিটি,
সবেই রয়েছে তার অবদানটি।


মাস্টার হয়েছি মামলা লড়ে,
সব শিখেছি তার জোরে-
বসেছি প্রধান শিক্ষকের পদে,
শত সহস্র তার আশীর্বাদে।


জৈষ্ঠ্য মাসের ভোরে
শুয়েছিনু ছাদের পরে-
সশব্দে মাঝরাতে
পড়ে যায় ছাদ হতে।


ছিন্নবস্ত্রে পাগলের প্রায়
কাটোয়া হাসপাতালে লয়ে যায়-
বাহাত্তর ঘন্টা মেয়াদ শেষে
জ্ঞান ফেরে মোর অবশেষে।


নয় বছর বয়সে-প্রাণ ফিরে পায়
বাবার প্রয়াসে -কিন্তু আজ হায়-
পূজার মাসে -বাবা কোথায়
বাবা কোথায়- খুঁজে নাহি পাই।


বটবৃক্ষের মত আগলে ছিলে তুমি,
দাও দেখা দাও -একটি বার-
স্পর্শ করি চরন চুমি
'ক্ষমা কর' বলি বার বার।


থাকতে নাহি পারতে মোর বিহনে
প্রতি রবিবারে যেতে শান্তিনিকেতনে-
কিন্তু আজ হায়-তুমি কোথায়?
হারায়ে খুঁজি -হেথায় হোথায়।


অকাল স্ট্রোকে প্রাণ নিল
তোমার কতো আশা ছিল-
সুখের সময় কাটাবে সুখে-
ঘরে রইব সবে হাসিমুখে।


ভূমে গরিয়সী পিতা -
জ্বালায়েছিনু তব চিতা।
পরিশেষে একটি কথা-
ফিরে এসো আবার হেথা।।



১৩ ই অশ্বিন,১৪২৪
বিজয়া দশমী।