মধু ফাল্গুনের বাসন্তী বিকেলে
হৃদয়ের জানালা খুলে দুরন্ত যুবক
যখন ছুঁয়েছিলো প্রেয়সীর কোমল দু'হাত
বৈরী বাতাস ভেসে এসে এমন সময়
তাকে দিলো ডাক যুদ্ধে যাবার।
পড়ন্ত সূর্যের রক্তিম হাসিটুকু রেখে ঠোঁটে-


ছুটলো যুবক রণাঙ্গনে লক্ষ অটুট রেখে
শ্যামল মেয়ের দু'চরণে প্রনাম শত এঁকে,
নাঙ্গা পায় আদুল গায় জুটল ছেলে কত
হাজার মুঠির বজ্র শিখা জ্বলল অবিরত।


 শব্দ কল্পে ভরা জীবনের বোধ
ক্যানভাস তুলিতে লিখে সহজ সে পাঠ
পুনরায় অধিকার করে পর্যালোচনা।
বর্গি পারবে না নিতে কেড়ে কল্পকায়া
ছেড়ে দিয়ে নাও তুলেছিলো পাল
           টেনেছিলো দাঁড় তার স্বপ্নের দৃঢ়তায়-


চলছে গুলি উড়ছে খুলি, মরছে মায়ের ছেলে
শরণার্থীর ছুটছে মিছিল মায়ার বাঁধন ফেলে।
নদী পাড় শাড়ি পরা তন্বি মেয়ের বিবর্ণ বেশ
এই কী আমার মা জননী এই কী আমার দেশ।


দাউদাউ জ্বলে আগুন,পোড়ে গ্রাম থাকে গ্রাম
পাহাড়সম দহন ব্যথায় ন্যুব্জ দেহ
তাজা রক্তের স্রোত বয়ে মিশে যায় যমুনায়
আগামী স্বর্ণালী সন্ধ্যার আগমনী বার্তা লেখে
শত শতাব্দীর অপেক্ষার পথ হবে শেষ
ছুটলো যুবক,বনবনানী মাঠ প্রান্তর-


ওই শোনো বেণুবনে শনশন বাজায় ধুন
যুবকের চোখে জ্বলে পলাশের রাঙা খুন
মনের বাতায়ন খুলে শান্ত প্রবাহে ভেসে
কৃষ্ণচূড়ার শাখায় রক্তের অনলে মেশে।


চোখে ভাসে যুবকের সেই প্রিয় মুখ
তুমি আমি ছিলাম অপরিচিত একদিন
কি করে এলে এত মনমোহিনী প্রেম
সংসার মায়া জাল ছিঁড়ে হৃদয়ের তটে
ওই কাজল কালো আঁখির পাতে-


মায়ের চোখের অশ্রুবন্যা পদ্মাতে যায় মিশে
তার হৃদয়ের তট উঠলো জ্বলে দারুণ বিষে।
লম্প দিয়ে ঝম্প মেরে অস্ত্র হাতে ছুটল রণে
ছুটছে গুলি দিড়িম দিড়িম অটুট সাহস মনে।


নিজেকে খোঁজে সে একান্ত নিজের মত করে
হেমন্তের পাতাঝরা দিনের ফসল শূন্য মাঠে।
দিনান্তের বলিরেখায় ঘুমন্ত মেঘের আড়ালে
পার করে ক্লান্তির অগোছালো সময়
বর্গিরা নিতে চায় জুলুমে মায়ের সম্মান-


কে ধরেছে অস্ত্র এসে মায়ের বুকের পারে
কে নিতে চায় প্রিয়ার সম্ভ্রম, দেখবে তারে
পৈচাশিক নিবেদনে বাড়ে অট্টহাসি রোল
যুবক তার মুখে তোলে জয় বাংলা বোল।


শেষ বিকেলের সোনালী আলোর ছায়াপথ
যতটুকু আবেগ জড়ানো ছিল সেখানে,
সবটুকু ঝেড়ে ফেলে, প্রিয়ার হাত ছুড়ে ফেলে
কাফন কপালে বেঁধে সে ছাড়ে হাক-


এসো নবীন এসো হে নওজোয়ান
হও সাইক্লোন,হয়ে এসো নভোযান ।
তোমারই সোঁতায় সব ভেসে যাক
তোমার ছোঁয়ায় পুড়ে হোক থাক।


আবছা পর্দার ছায়ায় কত গেছে ভিজে চোখ আঁচলের অদৃশ্যের বাতায়ন খুলে
দূর থেকে দেখে যায় জাফরিকাটা জানালায়
সুগন্ধি চুলের প্রলেপের আড়ালে
একমুঠো মিষ্টি হাসি যোগায় সাহস,
হে যুবক উচ্চ করো শির
তুমি নওজোয়ান, তুমি নির্ভক, তুমি সৈনিক।


৩০ মে ২০২২