মেলা বললেও কম বলা হবে আমাদের ছেলেবেলা
সব তুতভাই-বোন মিলে ছিলো এমন হট্টমেলা!
রোজ ঊষাকালে ঘুম ভেঙে যেতো, দাঁত মেজে, মুখ ধুয়ে
দিন শুরু হতো যারা গুরুজন সবার চরণ ছুঁয়ে।
পঠনপাঠন ও স্নান-খাওয়া সেরে পদব্রজে ইস্কুলে;
বিকেলে কিছুটা খেলাধুলা হতো একসাথে, প্রাণ খুলে।
পুকুরের ঘাটে হাতমুখ ধুয়ে নিত্য সন্ধ্যারতি,
-এভাবেই ক্রমে গড়ে উঠেছিলো ঈশ্বরে মতিগতি।
তবুও সময় থেমে থাকল না, সময়ের সিঁড়ি বেয়ে
ছড়িয়ে পড়েছি দেশে,ভিনদেশে; কারও বা হয়েছে বিয়ে।
আমারও চাকরি অফিসার পদে, সুখী দম্পতি বটে,
ঈশ্বর থাকে গ্রামের বাড়িতে; আমি আছি সংকটে;
বছরের পর বছর ঘুরেছে  ধুমধাম আয়োজনে,
সন্তান লাভে বঞ্চিত তবু, ঠিক করি মনে মনে,
- মন্দিরে গিয়ে রাখব মানত একসাথে করজোড়ে;
সেইমত উঠে চলেছি আমরা  প্রত্যুষে; কাকভোরে ;
অর্ধনগ্ন একটি মানুষ, না কি কংকাল ওটা !
সহধর্মিণী ভীত ও ত্রস্ত, শুরু করে দিলো ছোটা।
আমি ডেকে বলিঃ ভয় নেই, দ্যাখো, এখনও রয়েছে প্রাণ;
বেঁচেও হয়তো যেতে পারে, শুধু চাই যথাযথ ত্রাণ।
যা কিছু প্রসাদ সঙ্গে এনেছি, ওর মুখে দাও পুরে,
একটি মানুষ কাছে পেতে গিয়ে মানুষ ঠেলবো দূরে?


মানুষের কাছে মানত রেখেছি, পূর্ণ হয়েছে আশা,
ঝড়ে উড়ে গেছে মন্দির চূড়া, উল্টে গিয়েছে পাশা ।