বঙ্গবন্ধু ! সে তো এক মহা-পবিত্রতম প্রদীপেরই নাম
হীরা-মনি যত আছে সব তাঁর চরণধূলির চেয়ে নগণ্য দাম।


সে যেন চাঁদের পূর্ণ জোয়ার, অপরূপ রূপে মায়াময় মুখচ্ছবি
বিস্মিত দেখে ফুল পাখি নদী ঝরণা পাহাড় চিরসবুজ ঐ রবি ।


দামামার ডাক মাথা করে নত কন্ঠধ্বনি যখন উঠেছে বেঁজে
অগোছালো যত নিয়ম নীতির জঞ্জালগুলো থরে থরে উঠে সেঁজে।


তাঁরে নিয়ে তাই ব্যাকুল অধীর, ধরনীর যত কবি-মুনির্-ঋষি-সাধু
জ্ঞানী-গুনী-বীর, গবেষকগণ, ইতিহাসবিদ, খোকা বাবু থেকে দাদু ।


সকলেই শুধু তাঁর ধ্যানে আজ আকুল হয়েছে সুরের ভেলাও তাই
করুণ কিংবা খেয়ালি তরীতে ভাসিয়েছে তার অব্দির সীমা নাই।


আজ কেন যেন, মন করে আহা , বড় আনচান ! ঢেউ তোলে ব্যাথা মনে
টর্নেডো বয়, সাইক্লোন আসে, নীরব নিথর এ ধূসর মরুবনে ।


বুকের ভেতর জেগে ওঠে তাঁর স্মৃতিজাগা লাল-কালো-নীল দাগ
একাকী আকাশে মেঘমালা এলো, শ্রাবণে ভেজে বাংলার গুলবাগ।


মুষড়ে পড়েছে শস্যকনিকা, মাছ গাছ নদী, তরুলতা মাটি বায়ু
তাঁর শোকে কাঁদে জোয়ারের গতি, বাতাসের বেগ, ক্ষয়িষ্ণু পরমায়ু।


ইতিহাস তাঁরে খুঁজে ফেরে পথে ঘাটে মাঠে, মরু নদী গিরি কান্তারে
ধন্য হলাম, ধন্য জননী, জন্মভূমি, ধন্য তাঁর পদভারে।


দীর্ঘ দিবস র্দীঘ রজনী, মহাকাল তাই চেয়েছিল তাঁর পথ
কবে আসে সে মহাবীরোত্তম, সেই মহাকবি চড়ে আলোকের রথ।
বাংলাদেশের প্রতিশব্দ যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
তোমার আসন বাঙালি হৃদয়ে অবিনশ্বর চিরকাল বহমান।


হে মহানায়ক ! উপমেয় তুমি, উপমাও তুমি, তোমার তুলনা তুমি
শত-সহস্র ঋণের বোঝায় নুয়ে পড়ে তাই আমার জন্মভূমি।


তুমি একুশের, তুমি বাহান্নে, ঊনসত্তর, তুমি যে একাত্তর
পঁচাত্তরের রক্তে রাঙালে ঊষার আলোকে- তবু বিবর্ণ ভোর।


দীপ্র শর্বরীও মলিন-ধূসর, নিথর সাগর মৌন কেয়াবন
থেমে গেলো তাই দখিণা বাতাস, উত্তরি বায় জোছনার শিহরণ।


সারাটাজীবন জেলে জেলে তুমি কাটালে কেবল নিজের সুখেরে ভুলে
তোমার স্মৃতির বেদি আজো তাই ছেয়ে যায় শুধু শ্রদ্ধারই ফুলে ফুলে।