সর্বজয়ার দেহটা পুড়ছে
চিতার উপরে।
শ্মশানের স্তব্ধতা ভেঙে দিলো
আধপোড়া দেহটার 'পরে
বাঁশ পেটানোর শব্দ।
নিথর দেহের নেই কোনো প্রতিবাদ।
প্রতিবাদ ছিল না কোনো কালেই।


স্বামী শৌর্য বীর্যের পরিচয় দিয়ে,
ছয় সন্তানের জননী করেছে তাকে।
মৃত্যুশয্যায় বলেছিল,' সন্তানেরা
দেখবে তোমাকে। '
সন্তানদের বুকে জড়িয়ে
শুধু চোখের জল ফেলেছিল সে।


অনেক আশা ছিল মনে,
পাঁচ পুত্রসন্তান নিয়ে।
মানুষ করেছিল তাদের
কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে।
পুত্ররা চলে গেছে একে একে
যে যার নিজের সংসারে।
হয়তো তারা আছে সুখে!
কুড়ি টাকা মাসোহারা দেয় মাকে।
সর্বজয়া তার বোবা মেয়েকে
আগলে রেখেছিল অনেক অভিমানে।


আগুন নিভে গেছে....
ছাই হয়ে পড়ে আছে অভিমানী সর্বজয়া।
মাঝি হাঁকে, 'শেষ খেয়া ছাড়বে এখনই'।
পাড়ে থাকা মানুষজন তরীতে ওঠে তখনই।
একা বসে থাকে বোবা মেয়ে,
নির্লিপ্ত চাঁদের আলো মেখে।
কি যেন বলতে চায় বোবা চোখে!


শেষ খেয়া ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল
দৃষ্টির আড়ালে।