আজকে থেকে আর রবেনা চুপটি করে বসে ,
একলা খেপি আপন মনে নির্জনে উদাসে,
আজকে থেকে গল্প কথায় গায়ে বেঁচে রবে,
আগামীদিন হয়তো অনেক তারই কথা কবে !
ওইযে দেখায় ভাঙা দেয়াল খড়ের চালা ঘর,
ওটাই ছিল অট্টালিকা আমার খেপির ঘর।
অনেক ভোরে উঠত রোজ বসত উঠান পাশে,
ঝাপসা চোখে দেখতে পেলে ডাকত মুচকি হেসে।
আমার সাথে সম্পর্ক ভীষণ আপন তার,
যাওয়া আসার পথটি ছিল ওরই উঠান ধার ।
খবর নিতাম দেখলে তারে কেমন আছো তুমি,
চোখের জলে ভিজত অধর হারিয়ে যেতাম আমি।
নিটোল গালে অশ্রু ছুঁয়ে পড়তো ফোটা বেয়ে,
আমার হৃদয় উদাস হতো ওরই মুখে চেয়ে।
প্রভু তুমি এমন শাস্তি ওকেই দিলে একা,
আজকে থেকে পথটি শুধু রইবে পড়ে ফাঁকা।
ফাগুন বেলা দুপুর রোদে বট তলার ওই নীচে,
কোনো একদিন দাড়িয়ে ছিল সূর্য আলো পিছে।
শুধিয়ে ছিলাম সেদিন আমি যাবে কোথায় তুমি,
মুখ লুকিয়ে কাঁদলো শুধু চেয়ে রইলাম আমি।
অনেক পরে শান্ত হয়ে বললে আমায় শেষে,
আজকে জান মরণ আমায় ডাকছে অচিনদেশে।
আবার শুধাই এমন কেন কোথায় তোমার দেশ,
ডুকরে কেঁদে বললে আমায় সবাই নিরুদ্দেশ।
শুনোনি বাবু জ্বালালপুরে পুড়েছে বাড়ি ঘর ,
দুইটি জাতি আপন ছিল আজ হয়েছে পর।
আমার ঘরে ছিল সবার অবাধ আনাগোনা,
হিন্দু আর মুসলিম কি ছিলোনা আমার জানা।
স্বামীর রক্তে ভাসলো উঠান ছেলেও গেল চলে,
আর কি আমার রইল গাঁয়ে আমার শুন্য কোলে।
শুনে ভীষণ কষ্ট হলো নিলাম সাথে তারে,
বানিয়ে দিলাম ছোট্ট কুটির গায়ের দখিন ধারে।
সবার দানে দিন চলত সবাই আপন তার ,
ওর জন্য ছিলই আমার অবারিত দ্বার।
কেমন করে মন পুড়িয়ে কোনো একদিন ঘরে,
ললাট পরে সিঁদুর টুকু লাগিয়ে দিলাম তারে।
তখন বেলা প্রায় অবেলা ঠিক সাঁঝেরই মত,
শুন্য পথে ছড়িয়ে দিলাম আমার নিজের যত।
সমাজ সেদিন শুনলনা আর দুইটি হৃদয় কথা,
আজ অভাগীর রইলনা আর কোনই বুকে ব্যথা।
......... ....... .......................... .....................
20/12/2018


তপন সৎপথী (নিরক্ষর) এখন স্বর্গবাসী।