আমার জন্য কান্না কত- জমিয়ে রাখো মাগো
আমায় নিয়ে ভাবতে গিয়ে, কতই না রাত জাগো।
হাঁটতে তখন শিখেছি কেবল, ছোট্ট দুটি পা-
ভরসা কেবল আঙুল দুটি, সাথে যে আছে মা।
আঙুল দুটো ধরতে তোমার একটু গেলে ভুলে-
হারিয়ে যাবার হঠাৎ ভয়ে নিতে মা কোলে তুলে।
আজ মা তোমার স্পর্শ থেকে অনেকটা পথ দূরে-
কোল থেকে মা'র ছোট্ট খোকা- যাচ্ছে ক্রমে সরে।


দুপুরবেলায় খেলতে যাবে- বাঁধা মানেনা খোকা,
ভাত মাখিয়ে খাইয়ে দেওয়া, আর একটুখানি বকা।
আজকে যখন ক্লাসে যাব- সময় হাতে নেই,
মাখিয়ে আমায় খাইয়ে দিতে, খুঁজি আমার মাকেই।
আজ মা তোমার গভীর স্মৃতির খুঁজতে গিয়ে তল-
মাগো! তোমার পাগল ছেলের- আসছে চোখে জল।


তোমায় রেখে স্কুলও যাবনা- এতই আমার ভয়,
ছেলের জেদে মাঝবয়সেও- মা'র স্কুলে যেতে হয়।
ছোট্ট খোকা স্কুল ছেড়েছে, অনেক ক'দিন আগে,
মানুষ হবার শিক্ষাদৌড়ে পৌঁছেছে শেষদাগে।
তোমায় ভেবে এখন মাগো জ্যোৎস্নালোকে হাঁটা,
মানুষ হবার দৌড়ে এত কষ্ট কেন আঁটা ?
"জীবন যখন সন্তানেরই, কোথায় সাথে মা?"
মায়েরই সে অংশের আজ- একলা এ কান্না।


রাস্তায় যখন বরফওয়ালা ঘণ্টা বাজিয়ে হাঁকে,
বলতে মা, ঘণ্টা যেন- তোমার খোকাকেই ডাকে!
অনেক বছর বরফওয়ালা- আর আমায় ডাকে না!
এখন আমায় ডাকে শুধু- আমার প্রিয় মা।
ঘণ্টার সেই আহ্বানের অনেক অনেক বেশি-
তীব্রভাবে এখন আমায় ডাকে ট্রেনের বাঁশি ।
আসছে যে ট্রেন বাড়ি থেকে, নয়তো যাচ্ছে বাড়ি !
দেখে আসছে মাকে আমার, বলছে কথা তারই !


হুইসেলের ঐ আওয়াজটাতে- "মা" ডাক যেন শুনি!
বাড়ি যেতে ইচ্ছে করে, আর কত দিন গুনি !