আমরা বাঙালি হয়েও বাংলা বানান ভুল হলে ততটা লজ্জা পাইনা;যতটা লজ্জা পাই ইংরেজি বানান ভুল হলে।কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের এমন অনুভূতির পিছনে কোন মনস্তাত্ত্বিক কারণ যুক্ত আছে কি? আমি বলব হ্যাঁ আছে,অবশ্যই আছে।সেটা হল অবজ্ঞা।অনেকটা গেঁয়ো যোগীর ভিক্ষা না পাওয়ার মতো।।হয়তো অনেকে,মুখে মানবেন না।কিন্তু কাজে করবেন।আবেগে বলবেন, মাতৃভাষাকে কেউ অবজ্ঞা করে!কিন্তু এই সাইটে বেশিরভাগ লেখাতেই বানান বিভ্রাট লক্ষ্য করি।এমনকি কোনো কবির যে কবিতাটি ছাপার অক্ষরে স্নান করেছে।বই ও লিঙ্ক দিয়েছেন,তাঁর কবিতাটি'ও অনেক বানান ভুল লক্ষ্য করা যায়।কখনো টাইপ করতে গিয়ে ভুল,তো কখনো উদাসীনতার কারণে ভুল।আবার কখনো অজ্ঞতার কারণে ভুল।শেষোক্ত কারণটিকে যদিও ধরিয়ে দিয়ে সংশোধন করানো যায়।কিন্তু উদাসীনতার কারণের জন্য বানান বিভ্রাট রোগটা নিরাময় করা,খুবই দূরহ ব্যাপার।আর উক্ত দোষে দুষ্ট রোগীর সংখ্যাটা এতো বেশি যে,তাঁদের খপ্পরে পড়ে সঠিক বানানও মুখ লুকানোর ঠাঁই খোঁজে বর্ণ পরিচয়ে।এই ট্রাডিশন মোটেই সাহিত্যের সাথে যুক্ত মানুষের পক্ষে ও সাইটের পক্ষে পাংক্তেয় নয়।কারণ বর্ণগুলো বা শব্দগুলো ছবি আকারে আমাদের মস্তিষ্কের মেমোরিতে সঞ্চিত থাকে।আর ভুল বানানের ছড়াছড়িতে মস্তিষ্কে ভুল ছবিগুলি স্থান পাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবে।ফলে ভুল বানানের ছবিগুলি আমাদের স্মৃতিতে স্থায়ীভাবে গেঁথে যাওয়ার প্রভূত সম্ভাবনা আছে।ফল স্বরূপ সঠিক বানানগুলি মনে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরী করবে।তাই প্রত্যেক কবি ও পাঠককে এবিষয়ে সচেতন হতে হবে।তাছাড়া এই রোগ থেকে মুক্তি লাভের কোনো উপায় নেই।যখনই কোনো ভুল বানান দেখবেন ধরিয়ে দেবেন।আমাদের স্মরণে রাখতে হবে যে আমাদের কবিতাগুলি ছোট্ট গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।কাঁটাতারের বাঁধ ভেঙ্গে গোটা বিশ্ব ভ্রমণ করছে।তবে এটাও দেখেছি ভুল ধরিয়ে দিলেও অনেকে তা সংশোধন করেন না।অথবা ভুলটি স্বীকার করলে তাঁর সম্মানহানি হবে বলে ভাবেন।এটা মোটেই সমীচীন নয়।মানুষ মাত্রেই ভুল হয়,আর ভুল করেই আমরা শিখি।তাই আসুন আমরা এই সাইটকে বানান বিভ্রাট মুক্ত কবিতার সাইট হিসাবে তুলে ধরি।


এই সাইটে হাতে গোনা কয়েক জন মাত্র,অন্যের বানান বিভ্রাট লক্ষ্য করলে ধরিয়ে দেন।তাঁদের মধ্যে একজন হলেন শ্রদ্ধেয় কবি গোপাল চন্দ্র দাস মহাশয়।আমিও যথাসাধ্য চেষ্টা করি,তবে দেখেছি তরুণ তুর্কীর কথা অনেকে কান করেন না।তাতে আমার কিছু যায় আসেনা।যা সত্য তা দৃপ্ত কন্ঠে বলি, আর যা জানিনা তা মাথা উঁচিয়ে বলি,জানিনা!যেটুকু জানি তার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।অনেক শব্দ না বুঝতে পারলে জানার চেষ্টাও করি।আবার জানার চেষ্টাটাকে অনেকে কৈফিয়ত ভেবে বসে থাকে বা এড়িয়ে যায় ,অন্য কোনো কারণে।আবার কোনো কোনো কবিকে ভালবেসে বা নিজের আত্মার পরমাত্মীয় ভেবে কিছু পরামর্শ দিতে গিয়েও তাচ্ছিল্য মূলক কথা শুনতে হয়েছে।যেমন ধরুন "জ্ঞান দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ", "আমি আপনার চেয়ে অধিক সচেতন","ভাবছি কোনো পন্ডিত ব্যক্তিকে বানান সংশোধনের জন্য রাখবো" ইত্যাদি ইত্যাদি।অথচ তাঁদের লেখায় বানান বিভ্রাটে কবিতাটি নিভৃতে কাঁদছে!এই ধরণের আচরণ একজন সৃষ্টিশীল মানুষের সাথে মেলেনা;শুকটী মাছের গন্ধে নির্মল মনের বমি এসে যায়।একজন মহাত্মার কর্মে ও ব্যবহারে তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়।উগ্রতা,অসহিষ্ণুতাকে তাঁরা ধারেকাছে আসতে দেননা।আসলে আমরা প্রকৃত শুভাকাঙ্খী ও প্রবঞ্চকের মধ্যে পার্থক্যটা বুঝিনা।অনেকটা উলঙ্গ রাজাকে দেখে হাততালি দেওয়ার মতো ;প্রজাতেই ভক্তি বেশী।নাবালকের কথাটা মিথ্যে স্তোক বাক্যের স্রোতে হারিয়ে যায়,অথচ যা নিষ্কলুষ ও ধ্রুব সত্য।মানলে বা গুরুত্ব সহকারে শুনলে রাজার সম্ভ্রম রক্ষা হতো।তাই আসুন,সকলের সমবেত প্রচেষ্টায়,সচেতনতায়,মুক্ত হোক বানান বিভ্রাট।"একতায় বল"।


🌑 বি: দ্রঃ আমিও ব্যতিক্রম নই,তবে চেষ্টাটা করি।