।   শহীদ।


বাইশ, তেইশ; ছটফটানোর,  মেয়ে পটানোর বয়েস,
বাবা মা'কে নানান কাজে খুব চটানোর বয়েস।
তিনটে ছেলে,  ওই বয়েসী, ভীষণই ডানপিটে
এমনিতে বেশ সুবোধ বালক, স্বভাব টভাব মিঠে,
কিন্তু ওরা খুব গোপনে বোমা বাঁধে ঘরে,
কিন্তু ওরা রিভলভারে টিপ প্র্যাকটিস করে,
আরে না না, ধর্মপাগল জবরজঙ্গী নয়,
একথা ঠিক, শাসক পেতো এদের বিষম ভয়,
কুড়ির দশক, দেশ পরাধীন, অনেক আগের কথা,
তিনটে ছিলো দামাল ছেলে, রক্তে স্বাধীনতা।


থাপার, সিং আর শিবরামকে চিনতো যতেক লোক
দামাল ছেলের কাণ্ড দেখে শাসক গেলে ঢোঁক।
আজকে কোথাও করছে স্ট্রাইক কালকে চালায় গুলি
লোক খেপাচ্ছে,  বলছে কিসব স্বাধীনতার বুলি।
এসব ছেলে নিয়তিকে হেসে নিজেই ডাকে,
এসব ছেলের শিয়রপাশে মরণ বসে থাকে।
তার ওপরে ডানপিটেদের দেখো পাগলামি,
জজের সামনে চেঁচিয়ে বলে প্রাণ নিয়েছি আমি!
শাসক বোঝে এমন ছেলে বাঁচিয়ে রাখা দায়,
তিনটে ছেলের লাহোর জেলে ফাঁসি হয়ে যায়।
কুড়ির দশক,  দেশ পরাধীন, অনেক আগের কথা,
তিনটে ছিলো দামাল ছেলে, রক্তে স্বাধীনতা।


সত্তর সাল পার করবে আর কটা দিন এলে,
স্বাধীন ভারত, তেমন কোনো তফাত খুঁজে পেলে?
জাতের নামে চলছে লড়াই, ধর্ম নাড়ায় শিং,
এর জন্যেই মরলো ছেলে, হায়রে ভগত সিং!
সাদার শাসন থামার পরেই কালোর শোষণ শুরু,
ভাগ্যিস তা যায়নি দেখে শিবরাম রাজগুরু!
নেতাদের সব চলনবলন সাহেবমাফিক দেখি
সুকদেব থাপার থাকলে ওসব সহ্য হতো সে কি?
নেতার খারাপ লাগলে কথা আজও যাবে জেলে
আগে হতো ফাঁসি,  এখন গলায় দড়ি সেলে।
তবুও রাখি আশা, হয়তো কোথাও কোনো কোণে
নতুন কোনো দামাল ছেলে বাসন্তী গান শোনে।
কুড়ির দশক দেশ পরাধীন,  অনেক আগের কথা,
তিনটে ছিলো দামাল ছেলে, রক্তে স্বাধীনতা।


আর্যতীর্থ