।  আর একটা মেয়ে।


‘এই শুনছো , আমাদের আর একটা মেয়ে হলে কেমন হয়
মানছি, এমন ইচ্ছে হওয়া এইদেশে খুব কমন নয়, তবু...’


‘সখে যাই বলিহারি বাবু! বলি বয়েস কত হলো রয়েছে খেয়াল?
তিনকাল চলে গেছে জীবনে মশাই, এখন রয়েছে পড়ে শুধু বুড়োকাল। তাও?’


‘তুমি যদি মুখ তুলে চাও। কদিন ধরেই জানো, এটাই ভাবাচ্ছে ভারী,
কলপে বয়েস ঢাকি তাতে বয়ে গেলো, তোমাকে টানতে কাছে এখনো তো পারি, বলো?’


‘হঠাৎ আবার কি ভীমরতি হলো? মোটামুটি গুছিয়ে এনেছি সংসার,
মেয়েদুটো বড় হলো। শেষ থেকে ফের শুরু ভাবছো আবার, কেন?’


‘খটকা কোথাও কিছু থেকে গেছে যেন। মানুষ করেছি ঠিক কতটা ওদের,
আমাদের বেড়া থেকে বাইরে বেরিয়ে গেলে তবে পাবো টের, তাই না?’


‘সেটা আমি কোনোদিনও চাইনা। তবে তাতে আর কি যায় আসে,
বাতাসে ভাসছে ভয়, ফাটল ধরেছে আজ যে কোনো পুরুষকে করা বিশ্বাসে। সাংঘাতিক!’


‘ওদের কক্ষপথ ভুল নাকি ঠিক, সেকথা তো আগামীর কোলে আছে রাখা.
কিন্তু ভেবেছো কি, ওদের এই বড় হওয়া এত বেশি ভালোবাসা মাখা, খাদ নেই কোনো।’


‘বলতে চাইছো, সন্দেহ করা ওরা শেখেনি এখনো। ভরসা করলে বড় ঠকে আজকাল,
কি আর করবো বলো, জীবনে জুটবে কেউ, ভালো আর খারাপ তো যে যার কপাল। ভাগ্য।’


‘তাই তো বলছি ,যতই করো রাগ গো, শুরুর থেকে মানুষ করার জন্য আমার আরেকটা মেয়ে চাই,
পুরুষবিহীন বাঁচাটা জরুরী , এমন একটা মেয়ে বানাবো যে চলতে পারে একাই। দেবে?’


‘পাগল, এখন ঝক্কি কে আর নেবে? তবু তোমার স্বপ্ন শুনে হলাম বাক্যহারা
আগামীতে কন্যা আসবে যত, পুরুষ বিনাই বাঁচতে শিখুক তারা। তবে যদি হয়!’


‘ঠিক বলেছো, নারী লিখুক নিজের পরিচয়। সমানসমান ধানাইপানাই খুব পুরোনো ছক,
এমন নারী আসুক যারা পুরুষ শাসন করে, হয়তো তখন দুনিয়া থেকে লোপ পাবে ধর্ষক। রাজী?’


‘বিয়ের থেকে একই রকম রয়ে গেলে পাজি। যদিও লোকটা তেমন মন্দ নও,
যাহোক , একটা কথা জিগেস করি, একটু বাপু ঝেড়ে কেশে কও। বলি?’


‘প্রথমে মা, তারপরে বউ, প্রজা হয়েই চলি। বলুন রাণী সওয়াল টওয়াল যা এসেছে মনে,
এমনিতেও তো বিয়ের পরে আমার কিছুই থাকে না গোপনে। শুনি।’


‘কথায় তুমি বেশ জানি নিপুণই। ধরো আমি রাজীই হয়ে গেলাম,
পুরুষ ছাড়াই বাঁচতে পারে হলো ও এমন মেয়ে। কি দেবে তার নাম? বলুন করে কৃপা,’


‘মুখ খোলবার অনেক আগেই উত্তরটা জানো তুমি। নাম দেবো আসিফা।’


আর্যতীর্থ