। আট ঘন্টা।


এ আই যারা বানান তাঁরা শ্রমিক কি?
শ্রমিক হওয়ার সংজ্ঞা এখন সঠিক কী?
আই টি তে যার ‘হোম’ এও বাঁধা কাজ-শেকল,
সেও তো মগজ-শ্রম-ক্রীতদাস আজ কেবল ,
এইট থেকে ওয়ার্ক-আওয়ার সিক্সটিনেই,
বস্তুত তার রেস্ট বা ছুটি ফিক্সডই নেই..


সপ্তা-ঘন্টা বাহাত্তরে চান বাড়াতে ইনফো-বস,
নইলে নাকি যুবসমাজ দেশ গড়াতে টোটাল লস..


মেসেজ কোরো বিজি ফোনে, আজকে শুভ মে’দিবস।


শিক্ষা এখন প্রসব করে রোজ বেকার,
পেটের ভাতের হদিশবিহীন সেই শেখার
মূল্য ক্রমেই আসে কমে,ডিগ্রি প্রবল বাধা
সমাধানের দোর খোলে না চাকরি নামক ধাঁধা,
রিসেপশনে ব্যাক অফিসে টোটো অটোর সিটে
মাস্টার্সের সার্টিফিকেট লাগানো নেই পিঠে,
শ্রম করা সেই গ্র্যাজুয়েটের রোজের ঘামে,
ডিগ্রিতে না, আজ পরিচয় শ্রমিক নামে।
তা হোক , সে নাম অনেক বেশি সম্মানের,
নেই তুলনা পেট চালানোয় শ্রম-দানের।


নাই বা হলো অফিসার-এর  নাম ও যশ,
নয় অনুদান, রোজগার তার নিজের বশ।


চিনলে দিও চাপড় পিঠে, জানিয়ে শুভ মে’দিবস।


আর যে লোকের হালহকিকত একই ঠায়,
সঞ্চয়হীন জীবনটা খায় পেটের দায়,
ভোরের থেকে চলতে থাকে কাজের খোঁজ
খিদের সাথে হাতের পেশীর যুদ্ধ রোজ,
ভিটের থেকে অনেক দূরে, বে-রাজ্যে,
‘পরিযায়ী’ নাম তাকে কেউ শেখাচ্ছে,
একটা ঘরে ঘুমায় লোকে দশ বারো ,
ক’ঘন্টা কাজ মাথাব্যথা নেই কারো,
একলা মোবাইল ঘর জুড়ে দেয় সন্ধ্যাতে
কয়েক মিনিট ফেরত দেশে মন তাতে,
ঘরের ভাতের সুবাস দেবে বিদেশ-বাস
সেই আশাতেই ঘাম করেছে তুরুপতাস,
তার সাথে শোধ চওড়া সুদের চুক্তি-ঋণ,
খাটতে হবে আজন্মকাল, মুক্তিহীন।


ভিনদেশে সেই কাজ-গারদের ঘাম-বিবশ,
আজ আর কাল-এর আঁধার সমান যার নিকষ,


তারাই চালায় এক গোটা দেশ, জানিও শুভ মে’দিবস।


এঁরা শুধুই উদাহরণ, এমন আছে লক্ষ লোক,
আট ঘন্টার কাজের সময় যাঁদের কাছে মস্ত জোক।
দিন প্রতিদিন সংখ্যা এঁদের বাড়ছে আরো দেশ জুড়ে,
আট ঘন্টা চাইতে গেলেই দিচ্ছে মালিক শ্লেষ ছুঁড়ে।
হাজার বেকার লাইনে আছে, করলে দাবী বাইরে বস,
সাপটা- সোজা আসছে ধমক, জোক না যেটা, খুব নিরস।


মালিক জানেন, বাড়লে বেকার, বেকার তখন মে’দিবস।


আর্যতীর্থ