। আঁধারের ডাক।


ডাক আসে।
গহীন আঁধার থেকে মোহিনী মায়ার সুরে ডাক আসে।
আয় , আয় কালোর পিয়াসী, আয় আলোয় ধাঁধানো যত লোক,
আঁধারের বুকে আয়, বুজে যাক পল্লব, আলোরা নির্বাসিত হোক!
ডাক আসে। সম্মোহনের সুরে সাইরেন ডেকে যায়, অমোঘ ধ্বংস উল্লাসে...
আয় আলোতে আহত যত জীবিতের দল, পরিজনহারা যত মৃতবৎসল,
আয় নিজেকে লুকিয়ে রাখা কদাকার দাগী, আয় দুনিয়া লুটতে চাওয়া উন্মাদরোগী,
আলোর বিরোধী যত আপাত অন্ধ সব আয়,আয়,
সব ঢেকে দেওয়া এক অসীম কালোর নিশ্চিন্ততায়,
আয়, আয়, আয়... অনন্ত নিশিথের আগমনী গান ডেকে যায়,
অক্টোপাসের মতো কালো আঁধারের শুঁড় ঘন হয়ে আসে চারপাশে,
ডাক আসে।


সাড়া দেয় না-মানুষের দল।
অবয়ব মানুষেরই, কখনো জন্ম ছিলো মানবীর জরায়ুর থেকে,
ক্রমশ বইতে থাকা দুহাতে রক্তস্রোত বহুদিন দিয়েছে সে পরিচয় ঢেকে।
সাড়া দেয় তারা, এতদিন যে আঁধার পুজো করে গেছে,
সে অন্ধকারের মায়ার দানবী, এতদিনে ডাক পাঠিয়েছে।
কদমে কদম মেলে, নিঃসাড়ে জড়ো হয় তারা আলোর উল্টোপিঠে,
সারি সারি আলোহীন বাতি , নামহীন রাস্তায় রক্তের ছিটে,
ওরা প্রস্তুত।
আঁধারের দূত হতে ওরা প্রস্তুত।
ওরা আলো ভয় পায়, তাই দুনিয়াময় এক সূচিভেদ্য অন্ধকার চায়,
যেখানে সবাই অন্ধ, যেখানে চক্ষুষ্মানেরাও হাতড়ে রাস্তা খোঁজে,
যেখানে লুকানো যায় অতি সহজে।
কে কোথায় আছো, ওহে আলোর দিশারী, তুলে নাও দুইহাতে তিমিরনাশক আয়ূধ যে যার,
আঁধারসেনারা আসে, এখনো না জাগো যদি,
আলো খুন করে জিতে যাবে অন্ধকার।
কান পাতো, প্রলয়ের কালো ডাক ভাসছে বাতাসে,
ডাক আসে....


আর্যতীর্থ