। অরূপরতন।


একটুখানি দ্বিধায় ছিলাম হাঁটবো কি হাঁটবোনা,
এই পাড়াতে পড়শী সবাই জানা এবং শোনা।
উঠোন থেকে দুই পা দূরে রাস্তা বয়ে চলে,
কে যেন রোজ ফিসফিসিয়ে পথিক হতে বলে
একটুখানি দ্বিধা ছিলো সাড়া দেবো কিনা,
( কে যে ডাকে এমন নেশায় তাই তো জানি না!)
কানাঘুঁষোয় শুনতে পেলাম হাঁটতে যারা যায়,
পৌঁছে গেলেই তারা নাকি অরূপরতন পায়।
সেই লোভেতেই কেটে দিলাম তাবত শিকড়গুলো,
চরৈবেতির মন্ত্র নিলাম, সঙ্গী পথের ধুলো।


রোজই দেখি চারটে দিকে পাল্টে যাচ্ছে সবই
প্রেক্ষাপটে সময় দেখায় নতুন ছায়াছবি।
আজকে রাস্তা নদীর পাড়ে, কালকে ঘন বন যে,
আগামীতে পৌঁছে যাবে হঠাৎ কোনো গঞ্জে।
প্রতিটা দিন নতুন মানুষ আমার পাশে হাঁটে
নিপাট ভালোমানুষ থেকে নেশারু বখাটে,
সবার ঝোলায় জীবন কিছু গল্প জড়ো করে,
আমার মতো কিছু পাগল সেসব খুঁজে পড়ে।
মেঘ রোদ্দুর বন্ধু হলো, আসা যাওয়া করে,
মাঝে মাঝে পথও হারানো ঝড়ও এসে পড়ে।
এমনি করেই দিন কেটে যায়, পথচলা উৎসবে,
মাঝে মাঝেই ভাবনা আসে, পৌঁছাবো যে কবে!
পৌঁছে গেলেই অরূপরতন, সেটাই তো শুনেছি,
একদিন কে বললো আমায়, এইবারে পৌঁছেছি।


তাই যদি হয়, পথের শেষে অরূপরতন কই?
যাত্রা আমার শেষ হয়েছে, এবার তো পাবোই।
হাওয়া এসে বললো আমায় ফিসফিসিয়ে কানে,
অরূপরতন কোথায় সেটা বোকা লোকেও জানে।
এতটা পথ পেরিয়ে এলে পথিক হয়ে হেঁটে,
নানান লোকের স্বপ্ন এবং সঙ্গ নিলে বেঁটে,
সেসব গেঁথে তৈরী হওয়া মস্ত স্মৃতির হার,
এর চেয়ে আর দামী কিছু হয় কি পুরস্কার?
যাত্রাশেষে কি পেলে তায় কি বা এলো গেলো?
পথচলাটাই তোমার আসল অরূপরতন ছিলো...


আর্যতীর্থ