। আসল কারণ।


গাড়ি চড়া ছিলো সে তো রাজাদের কার্য,
গরীবের চিরকাল পায়ে চলা ধার্য
সেই কথা ভুলে গিয়ে এই গণতন্ত্রে
বাইক আর গাড়ি কিনি ই এম আই মন্ত্রে,
হেথা যাবো হোথা যাবো মন মাতে প্ল্যানিংয়ে
ছুটি নিয়ে দীঘা যাবো কাজে যাবো ক্যানিংয়ে
কে জানে খোয়াব দেখা কতদিন  চলতো,
সহজ কিস্তি ঋণ কান কত মলতো,
অবশেষে বুঝেছেন  সদাশয় সরকার,
জনতার ফের আজ হাঁটবার দরকার।
ইদানিং বাড়িয়েছে  ভুঁড়ি খুব সকলে
শরীরের আশি ভাগ ফ্যাটেদের দখলে,
গবেষণা করা হলো তার ওপর বিস্তর
সিক্স প্যাক না হয়ে কেন চর্বির স্তর,
সে ব্যাপারে হয়ে গেছে শ’দুয়েক লেকচার,
নানা মুনি নানা মত, কত কনজেকচার,
দেশ ও বিদেশ জুড়ে কত চুল চিরলো,
শেষ অবধি এক ঘাটে সব নাও ভিড়লো,
গাড়িঘোড়া চেপে লোকে হয়ে গেছে আলসে,
কসরত হয় নাকো, ভারী বুড়া হাল সে।
রাজসভা চিন্তিত , এভাবে কি চলে হায়,
দেশবাসী গাড়ি চড়ে খালি মোটা হয়ে যায়।
বাজেট তো এমনিতে ভারী কম স্বাস্থ্যে,
( সত্যি বলতে সেটা নাম কি ওয়াস্তে)
মোটা হওয়া থেকে দেশ কি করে যে বাঁচবে,
‘হাম ফিট’ হ্যাশট্যাগে কবে লোকে নাচবে,
দিনরাত ভেবে ভেবে বেরিয়েছে পন্থা
( বিরোধীরা বলে নাকি শুধুই শোষণ তা)
বোঝার ওপরে চাপে শাকআঁটি শৈল,
যত পারে তত দামী করা হবে তৈল।
তেল যদি  না ঢোকে গাড়ি আর বাইকে
জনতা ভাববে ধ্যাত, পায়ে হেঁটে যাই গে।
শুরু হবে দেশ জুড়ে হনহন হন্টন,
বড়ই সুষম হবে ক্যালোরির বন্টন।
দেশবাসী হাঁটে যদি, তবে দেশ এগোবে
‘ হাম ফিট’হ্যাশট্যাগে, বন্যার বেগ হবে।
হে আমার দেশবাসী, কেন করো চিন্তা,
পুচ্ছ উচ্চে তুলে, নাচো তাকা ধিন তা।
যে কারণে ঘরে ঘরে, চর্বির দলাটি,
সরকারে কেটে দিলো, দেখো তার গলাটি।
তোমরা অবুঝ ভারী, ভাবো না হে তলিয়ে,
সুবিধাটি না দেখে, খালি দাও গালি হে।
বরং স্লোগান তোলো, দাম আরো বাড় রে,
নেচেকুঁদে গান ধরো, হিপ হিপ হুররে!


পু:  এ নিয়মে থেকে গেছে একটাই ফাঁক হে,
      রোগা হওয়া নেই লেখা নেতাদের ভাগ্যে।
      তাঁদের তো তেল জোটে সরকারী খরচে,
      চড়বেন গাড়ি তাঁরা হায় এর পরও যে।
      জনতার ভাগে লেখা দাম বাড়া সুখ গো,
      নেতা তাতে বঞ্চিত, রয়ে গেলো দুঃখ।


আর্যতীর্থ