।অসহায়।


রথের সারথীটি ভারী বেয়াড়া ।
সেই কোনকালে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চেপে বসেছি,
সারা বিশ্বকে আমার প্রতাপ দেখাবো বলে,
আর হুকুম করেছি ওকে, চলো হে, দেখাই পৃথিবীকে,
খিদের বিরুদ্ধে কত আয়ুধ রয়েছে আমার ঝুলিতে,
অশিক্ষা, কুসংস্কার, ধর্মান্ধতার মতো মহাশয়তান মারতে পর্যাপ্ত অস্ত্রশিক্ষা করেছি কেমন!
সারথীটি রথে বসানোর সময় বিনয়ের অবতার হয়ে বলেছিলো,
‘ কর্তা, জগন্নাথ হয়ে বসে থাকুন, এই অস্ত্রভান্ডার আমি সামলিয়ে নেবো।
যুদ্ধক্ষেত্রে পৌঁছে আপনার হাতে দিয়ে দেবো, আপনি তুমুল লড়বেন খন।’
তখন থেকে আমার রথ এক অনন্ত চক্কোরে ছুটেই চলেছে।
লড়াইয়ের ময়দান দেখে উঠতে যেতেই দেখি, কখন যেন আমার হাত আর পা শেকল দিয়ে বেঁধে দিয়েছে সারথীটি।
আমি শুধু চেয়ে দেখতে থাকি,
আমার ঘোড়ার রঙ বদলে যাচ্ছে, হ্রেষাদের ঢং বদলে যাচ্ছে,
তবু সারথী ছাড়ছে না এতটুকু,
শৃঙ্খলিত যোদ্ধার শুধু আওয়াজই সম্বল।
অশ্বের কৌশলী খুরের ধুলোয় এখন আর আমি সামনে দেখতে পাই না,
নাকে ভেসে আসে বিষ্ঠার গন্ধ, তৃষ্ণার জলে মিশে গেছে অসহায় বন্দীত্বের কাষায় স্বাদ।
আমি টের পাচ্ছি, যুদ্ধক্ষেত্রে আমাকে না পেয়ে দেশময় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অশিক্ষা, ধর্মান্ধতা, দূষণ আর দুর্নীতি রাক্ষসেরা,
চেষ্টা করছি এই রথের দেওয়াল ফুঁড়ে বেরোনোর,
অথচ কালো দেওয়ালটা মোটা হয়েই চলেছে আরো..


ওই সারথী আসছে , ভারী মোটা আরেকটা  শৃঙ্খল পরাবে আবারও...


আর্যতীর্থ