। বাবা।


বানান ভুলে লিখতে হতো পাক্কা পঁচিশবার,
ক্ষমা বলে কিছু ছিলো অজানা বাবার।
'চ্যাপ্টারটা পুরো পড়ে তবে শুতে যেও'
অতীত থেকে গলা ভেসে আসে যে স্বপ্নেও।


মায়ের কাছে পড়তো জমা নানান অভিযোগ
চড়চাপাটি স্কেলের বাড়ি নিত্যকালীন ভোগ।
মায়ের হাতে খেতে রাজী যে কোনো মারধোর,
ভয়টা শুধু , না বলে দেয় ' আসুক বাবা তোর!'


ভর্তি কোথায় , পড়বোটা কি, কোথায় ভবিষ্যৎ,
আমার বাবা ছিলেন আমার উচ্চ আদালত।
গুমড়ে গেছি, দুমড়ে গেছি অনেক কথায় তাঁর
কল্পনাতেও ভাবিনি সে আদেশ অন্যথার।


ক্রমে ক্রমে বড় হলাম , মান্যি করে লোকে,
অপদার্থ রয়ে গেলাম আজও বাবার চোখে
টিপে টাপে দর করে রোজ বাজার করেন যিনি
তাঁর কাছে তো স্পেনসার মল ফালতু বিকিকিনি।


সখ্যতা তাঁর জমলো না ঠিক শপিং মলের সাথে,
আজও রোজের বাজার করেন থলে নিয়ে হাতে
দুই চার বার গেছি তাঁকে রেঁস্তোরাতে নিয়ে,
কতটা যে ফালতু খরচ বোঝান ধমক দিয়ে।


বৃহৎ বটের ন্যুব্জ দেহ, হাঁটু এখন কাঁপে,
প্রবল প্রতাপ কমেনি তাঁর, বয়েসকালের চাপে।
বরাবরই পছন্দ তাঁর স্পষ্ট কথা বলা
প্রতিবাদে আজও বুড়োর অকম্পিত গলা।


আমার মেয়েরা আজব ব্যাপার অবাক হয়ে দেখে
বাবা তাদের দাদুর কাছে আজও হিসেব শেখে।
এখন তো সব মা আর বাবার বন্ধু হবার প্রথা,
এই প্রজন্ম জানলোই না সেসব বাবার কথা।


আর্যতীর্থ